নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ জুলাই, ২০২১

বিদেশফেরতদের উদ্যোক্তা বানাতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-ব্র্যাকের উদ্যোগ

দেশে ফেরত আসা প্রবাসী কর্মীদের দক্ষ হিসেবে তৈরি করতে এবং তাদের উদ্যোক্তা মনোভাব বিকাশে যৌথভাবে কাজ করবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ এবং ব্র্যাক। দেশের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করতে কোভিড-১৯ রেসপন্স উদ্যোগের অংশ হিসেবে তারা এই উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

দুই বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের নাম ‘কোভিড-১৯ রিকোভারি : এন্ট্রাপ্রিনারশিপ ট্রেইনিং অ্যান্ড গেইনফুল এমপ্লয়মেন্ট ফর রিটার্নি মাইগ্রেন্টস অ্যাফেক্টেড বাই কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’। প্রকল্পটির আওতায়, কোভিড-১৯ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসীদের জরুরি আগমন সহায়তা, প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে তাদের নতুন ব্যবসা শুরু করার জন্য বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস্বরূপ অর্থ প্রদান করা হবে। অভিবাসীরা প্রাপ্ত অর্থ দ্বারা তাদের আর্থিক অবস্থান পুনর্গঠন করতে পারবেন। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সি নারী ও তরুণদের এই সহায়তায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসীদের ঘনত্বের অনুপাতের বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশের তিনটি জেলা; ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কুমিল্লার মানুষকে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হয়েছে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলমান মহামারির ফলে গত এক বছরে প্রায় ৫ লাখ প্রবাসী দেশে ফেরত আসতে বাধ্য হয়েছেন। সম্প্রতি ব্র্যাকের এক জরিপ থেকে জানা যায়, বিদেশ থেকে আগত এই মানুষদের অর্ধেকই কোনো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারছেন না।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘অভিবাসী শ্রমিকদের ফিরে আসা আমাদের অর্থনীতির জন্যে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি সুযোগও বটে। বিদেশ ফেরত প্রবাসীরা প্রবাসজীবনে অর্জিত দক্ষতা ও জ্ঞান ব্যবহার করে নিজেদের সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন অথবা লাভজনক কর্মসংস্থানে সংযুক্ত হতে পারেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘২০০৬ সাল থেকে ব্র্যাক অভিবাসীদের জন্য নানা কাজ করছে। আমরা ব্র্যাকের এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে আনন্দিত।’

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন ‘কোভিড-১৯-এর কারণে অনেক প্রবাসী যেমন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, তেমনি দেশে ফেরত আসা অভিবাসীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনরেকত্রীকরণের জন্য দেশের সরকারি, বেসরকারি সব শ্রেণির সামর্থ্যবানদের একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তাও বোঝা গেছে। যখন আমাদের স্বল্প পরিসরে অধিক কাজ করতে হয়, তখনই পার্টনারশিপের গুরুত্বটি সামনে আসে। দেশের অর্থনীতির উন্নয়ন সাধনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং বিদেশফেরতদের উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে উৎসাহ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক করোনা আক্রান্ত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং প্রথম সারির কর্মীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে অংশগ্রহণ করার জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে। মানুষের দক্ষতা বিকাশে ব্যাংকটি ইউসিইপি বাংলাদেশের সঙ্গেও কাজ করে যাচ্ছে। ২০২১ সালের জন্য, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ কোভিড-১৯-এর প্রভাবে তৎক্ষণাৎ সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে ১৩৫ মিলিয়ন টাকা (১ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) অর্থের একটি কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাংকটি দেশের জন্যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা এবং তাৎক্ষণিক সহায়তা নিশ্চিত করবে এবং জীবনযাত্রার দীর্ঘমেয়াদি মানোন্নয়নে অবদান রাখবে। বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায়, দেশে ফেরত আসা অভিবাসীদের পুনঃএকত্রীকরণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ব্র্যাক। ব্র্যাকের নিজস্ব তহবিল ছাড়াও বাংলাদেশে অবস্থিত রয়্যাল ড্যানিস দূতাবাস, দ্য সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট, করপোরেশন অ্যান্ড ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মতো প্রতিষ্ঠানও এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে অবদান রাখছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close