ইসমাইল রিফাত, বেরোবি
রমেকে বেরোবির ছাত্রকে মারধর
বিচার চেয়ে মানববন্ধন
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) মায়ের চিকিৎসা নিতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজুল করিম রিয়াদ। কিল-ঘুষিতে তার কানের পর্দা ফেটে গেছে। তিনি শুনতে পাচ্ছেন না। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রমেকের জরুরি বিভাগের সামনে রমেকের কর্মচারী উদয়ের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা রিয়াজুল করিম রিয়াদের ওপর এ হামলা চালায়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রিয়াদ তার ছোট ভাইসহ মায়ের ডায়ালাইসিসের জন্য ভর্তি করতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইমার্জেন্সি বিভাগে আনেন। ওয়ার্ডের দায়িত্বশীলরা ৩০ টাকার বেশি দাবি করলে করলে রিয়াদ তা দিতে অস্বীকার করায় তাকে ১৫-১৬ জন এসে মারধর করে। এ সময় তার ছোট ভাই মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করলে তাকেও মারধর করে। মোবাইল কেড়ে নেয়। চলে যাওয়ার সময় মোবাইল ফেরত দেয় তারা। রমেকের স্টাফ উদয়ের নেতৃত্বে এ হামলা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পরে পুলিশি নিরাপত্তায় শিক্ষার্থী রিয়াদ এবং তার মাকে চিকিৎসার জন্য মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলার শিকার রিয়াজুল করিম রিয়াদ ভাঙা গলায় বলেন, ‘বাম কানে শুনতে পারছি না। ডাক্তাররা বলছেন বাম কানের পর্দা নাকি ফেটে গেছে। চারটা টেস্ট দিয়েছে, তিনটা টেস্টেই ঢাকায় করতে হবে। রংপুরে এগুলো টেস্ট করা হয় না। ছোট ভাইটার হাত ভেঙে গেছে। ব্যথায় কাতরাচ্ছে।’ এ সময় তার ছোট ভাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদ করিমও মারপিটের শিকার হয়।
রিয়াজুল করিম রিয়াদ আরো বলেন, ‘আমার মাকে মেডিকেলে ভর্তি করাতে এসে ইমার্জেন্সি ইউনিটের সামনে অতিরিক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে এবং আমার ভাইকে প্রায় ১৫ থেকে ১৬ জন মিলে মারধর করে।
॥এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে তারা গুম করার হুমকিও দেয়। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মায়ের চিকিৎসা নিতে এসেও মারধরের শিকার হলাম। আমি এর বিচার চাই। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রক্টর মো. গোলাম রব্বানী বলেন, ‘এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি ঘটনা জেনে মেডিকেলে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে রিয়াদ এবং তার মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ পদক্ষেপের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তের (উদয়) বাবা মাফ চেয়েছেন। কিন্তু আমরা একাই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। ভিকটিম (রিয়াদ) যদি চায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। শিক্ষার্থীদের রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন চাইলেই সমঝোতা করতে পারে না। আসলে ভিকটিম যেভাবেই চাইবে সেভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সহযোগিতা করবে।’
ধাপ পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ (এসআই) মাহমুদুল হক এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। লিখিত অভিযোগ করা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
"