নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ জুন, ২০২১

বাজারে নতুন ধান, তবু চালের দাম বাড়তি

বাজারে নতুন ধানের চাল উঠেছে। প্রতি বছর এই সময়ে চালের দাম কমতির দিকে থাকে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। নতুন ও পুরোনো দুই ধরনের চালের দামই বাড়তি। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের দাম বেশি থাকার কারণে সব ধরনের চালের দাম বাড়ছে। এ ছাড়া লকডাউনের কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার চাল আসতে পারছে না। যে কারণে চালের দাম বাড়ছে। এই তালিকায় রয়েছে ভোজ্য তেলের দামও। তবে কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম।

গতকাল শুক্রবার রামপুরা, মহাখালী ও কারওয়ানবাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। খুচরা বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি চিকন চাল, নাজির শাইল ও মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা কেজি। চার দিন আগে এই চালের দাম ছিল ৬৩ টাকা কেজি। অর্থাৎ চার দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে দুই টাকা। শুধু চিকন চালই নয়, মোটা ও মাঝারি চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা করে। রাজধানীর বাজারগুলোতে ২৮ ও ২৯ ধানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকা কেজিতে। এই চাল ৫০-৫২ টাকা কেজি বিক্রি হতো। এ ছাড়াও ৪৬-৪৭ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া মোটা পাইজম চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজিতে।

রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় গত ৭ জুন যে চালের দাম ছিল ৪৮ টাকা কেজি, এখন সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। আর গরিবের মোটা চাল দাম বেড়ে হয়েছে ৪৮ টাকা কেজি। চার দিন আগে এই চালের দাম ছিল ৪৬ টাকা। এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্যানুযায়ী, সব ধরনের চালের দাম ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, দুদিন আগে যে মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি। এখন সেই মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে। আর দুদিন আগে যে মসুর ডাল ৯০ টাকা কেজিতে পাওয়া যেত, এখন সেই মসুর ডাল কিনতে ১০০ টাকা লাগছে। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ভোজ্য তেলও। চার দিন আগে পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ৬৬০ টাকা, এখন সেই তেল বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ টাকা। অর্থাৎ দুদিনের ব্যবধানে পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম বেড়েছে ২০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি আলুর দাম বেড়েছে তিন টাকা করে। ২২ টাকা কেজি আলু তারা এখন ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন।

দাম বেড়েছে দেশি ও আমদানি করা আদার। প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ২০ টাকা। দুদিন আগে যে আদা ১০০ টাকায় পাওয়া যেত এখন সেই আদা কিনতে ১২০ টাকা লাগছে। দুদিন আগে যে আদার দাম ছিল ১২০ টাকা এখন সে আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। দাম বেড়েছে ডিমের। গত সপ্তাহে যে ডিম বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা হালি এখন সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা হালি। অবশ্য গত ৩ জুন বাজেট উপস্থাপনের পর আরো দুই দফায় বেড়েছে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম। ক্রেতারা বলছেন, করোনার কারণে আয় কমেছে সাধারণ মানুষের। রাজধানীর মানিকনগর এলাকার বাসিন্দা তানিয়া সুলতানা বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও বেতন বাড়ে না, ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। জিনিসপত্রের দাম বাড়ার ফলে মধ্যবিত্তদের যে কষ্টও হয় তা কেউ বোঝে না বলেও জানান তিনি। তবে গতকাল থেকে দাম কমেছে পেঁয়াজের। আর সবজি দাম আগের মতোই। সেইসঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে মুরগির দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ করেই বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গিয়েছিল, যে কারণে দাম বেড়ে যায়। ৪০ টাকা থেকে লাফিয়ে দাম বেড়ে কেজি ৬০ টাকা হয়ে যায়। তবে এখন সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে এখন খুচরায় ৪৮ টাকায় নেমে এসেছে। ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, এখন পেঁয়াজের সরবরাহ অনেকটাই ঠিক হয়ে গেছে। যে কারণে দাম কমেছে। এদিকে ব্রয়লার, সোনালি ও লাল লেয়ার মুরগি আগের দামেই বিক্রি হয়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা ও লাল লেয়ার মুরগির কেজি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২৩০ টাকা। সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে আগের মতো ফুলকপির পিস বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। শসার কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এ ছাড়া পটল, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙে বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৪০-৫০ টাকা। বরবটি ৬০-৭০ টাকা, গাজর ৮০-১০০ টাকা, পাকা টমেটো ৬০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close