গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

  ০১ মার্চ, ২০২১

নাব্যতা সংকটে পণ্যবাহী ৩০ জাহাজ আটকা

শুষ্ক মৌসুমে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাবনার নগরবাড়ী-সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীর গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ নাব্য সংকটে পড়েছে। ওই নৌপথের বিভিন্ন পয়েন্টে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়েছে। চ্যানেলে পানির গভীরতা কমে যাওয়ায় সেখানে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। চট্টগ্রাম ও মোংলা থেকে ছেড়ে আসা নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী বন্দরগামী বিভিন্ন সার, গম, কয়লা ও ক্লিংটার বোঝাই ৩০টির অধিক কোস্টার জাহাজ বেশ কয়েক দিন ধরে এই নৌরুটের দৌলতদিয়া অংশে আটকা পড়ে আছে।

গতকাল রবিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাট থেকে এক কিলোমিটার ভাটিতে পদ্মা নদীতে নোঙর করে আছে এমভি প্রিন্স অব আরহাম, এমভি তাজবীদ দীবা, এমভি রাসেল-৭, এমভি শাহনেওয়াজ, এমভি মিজাব-২, এমভি সুমাইয়া ছোঁয়া, এমভি হাসিবুর, এমভি সাবিত-৫, এমভি দেশভ্রমণ, এমভি ঝর্ণাসহ ৩০টির অধিক কোস্টার জাহাজ। শতাধিক শ্রমিক ওই জাহাজগুলো থেকে মালামাল নামিয়ে বোলগেটে বোঝাই করছেন।

এ সময় আটকে পড়া জাহাজ চালকদের (মাস্টার) সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরই পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি কমে দৌলতদিয়া-নগরবাড়ী-বাঘাবাড়ী নৌরুটে অসংখ্য ডুবোচর সৃষ্টি হয়। দেখা দেয় নাব্য সংকট। এরমধ্যে নৌ-চ্যানেলের মোল্লারচর, ব্যাটারিরচর, কানাইদিয়া, লতিফপুর, নাকালিয়া ও পেঁচাখোলা এলাকায় নাব্যতা সংকট সবচেয়ে বেশি। প্রয়োজনীয় পানির গভীরতা না থাকায় সেখানে ১০ থেকে ১৩ ড্রাফটের মালবোঝাই কোনো জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। জাহাজের আমদানিকারকের প্রতিনিধি সুমন দাস বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে জাহাজ থেকে মালগুলো আনলোড করতে না পারলে এর মালিকপক্ষকে প্রতিদিন জাহাজপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে। এ ক্ষেত্রে ২২ দিন পার হলে জাহাজ ভাড়া দ্বিগুণ পরিশোধ করতে হবে।

তাই জাহাজ থেকে মালগুলো দ্রুত নামিয়ে সেগুলো বোলগেটে করে নগরবাড়ী ও বাঘাবাড়ী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জাহাজ থেকে মালামাল নামানোর কাজে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘জাহাজগুলো এখানে এসে আটকে পড়ছে। এখান থেকে মালামাল আনলোড করে আমরা সেগুলো বোলগেটে তুলে দিচ্ছি। এতে মালের মালিকপক্ষকে বোলগেট ভাড়া ও লেবার খরচ বাবদ অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে।

আটকে পড়া জাহাজ এমভি দেশভ্রমণের ড্রাইভার মো. ইমরুল শেখ জানান, চট্টগ্রম বন্দর থেকে ইউরিয়া সারবোঝাই ১০ ড্রাফটের জাহাজ নিয়ে তিনি সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী যাচ্ছিলেন। পথে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটের কাছাকাছি এসে নাব্য সংকটে আটকা পড়ে।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চল মানিকগঞ্জ ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ খান জানান, বর্তমানে পদ্মায় পানির গভীরতা রয়েছে ৭-৮ ফুট। এসব পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য প্রয়োজন ১২ থেকে ১৭ ফুট। আমরা নৌ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেটি জানিয়েছি। এর পরও এরা অতিরিক্ত পণ্য বহন করছে যে কারণে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এসে এসব পণ্যবাহী জাহাজকে আটকে থাকতে হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close