তিন দফা দাবি না মানায় ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষে পুনরায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বিকাল ৫টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে তারা টায়ারে ?আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল করেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় পুলিশ রহস্যজনক কারণে এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা দিলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অচেনাদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সুপ্রভাত হালদার জানান, ‘হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।’ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামালাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছেন। তবে তারা আত্মগোপন করায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আশা করি দ্রুত হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

?গত মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ১০ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিকালে মঙ্গলবারের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা করা ও দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। এসব দাবি পূরণে গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এর আগে বৃহস্পতিবার মামলাটিতে কারো নাম উল্লেখ না করায় সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা। তারা মামলাটিতে রূপাতলী বাস মালিক সমিতির কয়েকজন নেতার নাম অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সজল ও মেমিকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে এবং শ্রমিক রফিককে গ্রেপ্তার ১ ঘণ্টার মধ্যে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। এর জের ধরে ওই রাতেই গভীর রাতে শিক্ষার্থীদের মেসে হামলা চালায়। হামলায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়, এদের মধ্যে ১৩ জনকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর প্রতিবাদে পরের দিন সকাল ৭টা থেকে টানা ১০ ঘণ্টা বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে যদিও শিক্ষার্থীরা এর দায় নেয়নি। ওই হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির মাধ্যমে পুলিশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামলা ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে বিকাল ৫টায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

"