জালাল উদ্দিন হাককানী, মহম্মদপুর (মাগুরা)

  ২৪ জানুয়ারি, ২০২১

বরাদ্দ পাওয়া জমির দখল পাচ্ছেন না বিধবা

ভূমিহীন নবিরন খাতুন। বয়স ৬০ পেরিয়েছে। এই বয়সেও পূরণ হয়নি তার স্বপ্ন। এখনো জীবনযাপন করেন জরাজীর্ণ বাড়িতে। যে জমিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাও বিক্রি হয়ে গেছে। কোথায় যাবেন ভেবে পাচ্ছেন না। পাগলের মতো ছুটছেন সরকারি দপ্তরগুলোতে। ঘর নির্মাণের জন্য ২০১৫ সালে সরকারি কবুলিয়তমূলে খাস জমি পান তিনি। গত পাঁচ বছরেরও সে জমির দখল পাননি তিনি। উল্টো তাকে ভয় দেখানো হয়। নবিরনের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার তেলিপুকুর গ্রামে। সে মৃত চুন্নু মিয়ার স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন নবিরন। পরের জায়গায় কোনো রকম ঘর পেতে এক ছেলে নিয়ে বসবাস করেন। কখনো খাবার জোটে, কখনো জোটে না। ৪০ দিনের কর্মসূচিসহ বিভিন্ন জায়গায় মাটি কাটার কাজ করে সংসার চালাতেন। এখন কাজে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। তবুও ভিক্ষা করেন না। ২৫ থেকে ২৬ বছর ধরে আশ্রিতা হিসেবে থাক জমিও এখন বিক্রি হয়ে গেছে। যেকোনো সময় তার ওই জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। এখন তিনি দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।

নবিরোন নেছা বলেন, ‘আমার ১০ টাকার একখান কার্ডও নাই, ভিজিএফ কার্ডও নাই। বিধবা ভাতার কার্ড চাইলে বলে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাহা লাগবি। এন্নে আমার কাছে টাহা নাই বাজান। আমি এহন কি হরব। কোনো ধকল নাই। পরের জায়গায় থাকিরে বাজান, এট্টু জাগা জমি নাই। বিভাগ কমিশনার জমিডা দিছিল। আপনারা মনে হরেন বিটি ভিক্ষে হরে খায়। না বাজান ভিক্ষে হরে খাইনে। সারা জীবন কাম হরে খাইছি। আমার জমিডা আমারে এহন কেউ বুঝে দেয় না। অফিসি গিলি কয় তোমার বাপের জমি নাহি। আমারে বিশ্রি কতাবাত্তারা কয়। সরকার জাগার ঘর নাই তাগারে জমি দিচ্ছে, ঘর দিচ্ছে। আমি জমিও পালাম না, ঘরও পালাম না।’

মহম্মদপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাবেয়া বেগম বলেন, নবিরন খাতুন সরকারিভাবে জমি পেয়েছে। কিন্তু দখলে যেতে পারছে না। আমি আগের ইউএনও স্যারের কাছে বলেছিলাম তার দখল বুঝায়ে দেওয়ার জন্য। এ ব্যাপারে মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম বলেন, এমন অনেকেই আছে তাদের সামর্থ্য নেই জমিতে যাওয়ার। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন দিলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পাল বলেন, সে আবেদন দিলে তার কাগজপত্র দেখে জমির দখল দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close