খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

  ২১ জানুয়ারি, ২০২১

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

চতুর্থ দিনে গড়াল দুই শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজাপ্রাপ্ত দুই শিক্ষার্থী তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে ৪৮ ঘণ্টা আলটিমেটাম শেষে আমরণ অনশন শুরু করেন। প্রশাসনের বলছে, দুজন শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ ও তদন্তে অসহযোগিতার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে এই শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাত ৭টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম ও বাংলা ডিসিপ্লিনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমান তাদের পূর্বঘোষিত আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।

এদিকে, ওই শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধান মেনে আত্মপক্ষ সমর্থন অথবা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে আপিল করার জন্য গত দুদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক কয়েক দফা আহ্বান জানান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থানে অনড় থাকেন।

ওই শিক্ষার্থীদের দাবি, পাঁচ দফা দাবিতে গত বছরের ১ ও ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করেছিলেন, তাতে তারাও অংশ নিয়েছিলেন। সে কারণে অন্যায়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বছর পর গত ৩১ ডিসেম্বর ইমামুলকে দুই বছর ও নোমানকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে। অন্যায়ভাবে তাদের এই বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা না হলে তারা অনশন চালিয়ে যাবে এবং তাদের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এই আন্দোলন শেষ হবে।

এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে মোবারক হোসেন নোমান বলেন, ‘প্রশাসন যদি আমাদের ওপর আরোপিত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে না নেয়, তবে মৃত্যুর মাধ্যমেই আমাদের অনশন কর্মসূচির অবসান ঘটবে।’

ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন মেনেই একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমের তাদের এই সাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি এখনো তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, শনিবার শিক্ষার্থীরা তাদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ও রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা অনশন শুরু করে।

এরপরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক শরীফ হাসান লিমনসহ বেশ কয়েক শিক্ষক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে যান। এ সময় উপাচার্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আপিল করার অথবা অভিযোগকারী দুই শিক্ষকের কাছে গিয়ে ‘সরি’ বলার পরামর্শ দেন। শিক্ষার্থীরা সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে উপাচার্য প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘দুই শিক্ষকের পথ আটকিয়ে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ এবং অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তাদের আপিল করার সুযোগ আছে।’ গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলমান রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close