বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
বেনাপোল বন্দর
সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীরা কাজে ফিরেছেন
যশোরে বেনাপোল বন্দরে চোরাচালানে সহযোগিতার অভিযোগ এনে কাস্টমস কর্তৃক এক সিঅ্যান্ডএফ সদস্যের কাস্টমস পারমিট কার্ড বাতিল ও মামলা করার প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে স্টাফ সদস্যরা কর্মবিরতির ডাক দেয়। এতে কাস্টমস কার্গো শাখার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা কাস্টমস হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা ১০ দফা দাবিসহ চলমান সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পণ্য খালাস বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। এরপর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সমস্যার সমাধান হয়। ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর তারা কাজে ফেরেন। এতে সচল হয় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম।
ভুক্তভোগী সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্য আক্তারুজ্জামান আক্তার জানান, গত বুধবার রাতে একটি কয়লার ট্রাক যখন ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তখন আমি বর্ডারের কার্গো শাখা থেকে ওই পণ্যের মেনিফেস্ট নাম্বার ও ইনভয়েস তুলে বাড়িতে চলে আসি। পরবর্তী সময়ে রাতে কাস্টমস কর্মকর্তারা আমাকে ফোন করে বন্দরের ট্রাক টার্মিনালে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি একটি ভরতীয় ট্রাক থেকে ফেনসিডিল এবং আমি যে ট্রাকটির কাগজপত্র তুলি সে ট্রাকটি থেকে অবৈধ ওষুধ উদ্ধার করে। সে সময় কাস্টমস কর্মকর্তারা আমার কাছ থেকে কাস্টমস কার্ডটি নিয়ে নেয় এবং ট্রাকটি ও আমাকে নিয়ে কাস্টমস হাউসের মধ্যে আসে। পরে তারা একটা কাগজে আমার সই নিয়ে কাস্টমস কার্ড সিজ করে নিয়ে রাত ১২টার দিকে আমাকে ছেড়ে দেয়। কাস্টমস কর্মকর্তারা বলেন, অবৈধ পণ্য আনার অপরাধে আমার নামে মামলা হবে।
সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, অপরাধ করবে ভারতীয় ট্রাকচালক আর তার দোষ পড়বে সিঅ্যান্ডএফ স্টাফদের ওপর। এটা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য না। যে কারণে প্রতিবাদমুখর হন সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীরা। এতে করে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকায় প্রবেশের অপেক্ষায় বন্দরের দুই পারে শত শত ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়ে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হওয়ায় শুরুর ছয় ঘণ্টা পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে পণ্য খালাস ও আমদানি-রপ্তানি সচল হয়।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং সিঅ্যান্ডএফ নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। আক্তারুজ্জামান আক্তারের কাস্টমস কার্ড ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার নামে কোনো মামলা হবে না বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার ড. মো. নেয়ামুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করা হয়েছে। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে ভারতীয় আমদানি ট্রাকে কোনো প্রকার অবৈধ পণ্য পাওয়া গেলে সেগুলোর জন্য সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ দায়ী থাকবে না। সেই সঙ্গে চোরাচালান প্রতিরোধে কাস্টমস সদস্যদের আরো নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে করে পরবর্তী সময়ে এ ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে।
"