গাজীপুর প্রতিনিধি

  ১৬ জানুয়ারি, ২০২১

উফশী-বোরো চাষ গাজীপুরে শুরু

গাজীপুর জেলার পাঁচ উপজেলাতেই চলছে উচ্চফলনশীল (উফশী)-বোরো ধানের চাষ। শীত উপেক্ষা করে কৃষকরা এরই মধ্যে ধানের চারা রোপণ শুরু করে দিয়েছেন। চলতি মৌসুমে জেলায় ৪৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে উফশী, ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিড এবং ১৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস। এজন্য বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছেন কৃষক। লক্ষ্যমাত্রার ৪২ ভাগ জমিতে ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে- লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে এবার উফশী-বোরোর চাষ হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় চলতি মৌসুমে মোট ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে গাজীপুর সদর উপজেলায় ১২ হাজার ৩৮০ হেক্টর, কাপাসিয়া উপজেলায় ১৩ হাজার ৫৬৫ হেক্টর, শ্রীপুর উপজেলায় ১২ হাজার ৯৫ হেক্টর, কালিয়াকৈর উপজেলায় ১০ হাজার ৩২০ হেক্টর, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৯ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে। ওই উপজেলাগুলোতে উফশী, হাইব্রিড এবং স্থানীয় জাতের ধানের লক্ষ্যমাত্রা পর্যায়ক্রমে সদরে ৮ হাজার ২০০ হেক্টর, ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর ও ৩০ হেক্টর, কাপাসিয়া উপজেলায় ১১ হাজার ৯০০ হেক্টর, ১ হাজার ৬৩৫ হেক্টর ও ৩০ হেক্টর, শ্রীপুর উপজেলায় ৯ হাজার ১০০ হেক্টর, ২ হাজার ৯৭৫ হেক্টর ও ২০ হেক্টর, কালিয়াকৈর উপজেলায় ৯ হাজার হেক্টর, ১ হাজার ২৬০ হেক্টর ও ৬০ হেক্টর এবং কালীগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার হেক্টর, ২ হাজার ৯৮০ হেক্টর ও ১০ হেক্টর জমি।

এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস প্রদত্ত তথ্যানুসারে চলতি মৌসুমে বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমি। আর অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ১০১ হেক্টর জমি। এর মধ্যে উফশী ধানের বীজতলা ২ হাজার ২৬০ হেক্টরের স্থলে ২ হাজার ৫৪৫ হেক্টর, হাইব্রিড ৫২০ হেক্টরের স্থলে ৫৪৩ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ১০ হেক্টরের স্থলে ১০ হেক্টর জমিতে তৈরি হয়েছে।

সরেজমিনে এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ অঞ্চলে শ্রমিক ও হালের বলদের সংকট রয়েছে। যার কারণে কৃষকরা অমানুষিক পরিশ্রম করে কোঁদাল দিয়ে কুপিয়ে জমি প্রস্তুত করছেন। আবার অপেক্ষাকৃত সচ্ছল কৃষক পাওয়ার টিলার (ট্রাক্টর) দিয়ে তাদের জমি প্রস্তুত করছেন। অনেক কৃষিশ্রমিক তিন ভাগের এক ভাগ ধান জমির মালিককে দেওয়ার শর্তে বর্গায় জমি চাষ করছেন। কেউ কেউ বিঘায় পাঁচ থেকে সাত মণ ধান দেওয়ার শর্তেও জমি বর্গা নিয়েছেন। অন্যান্য বছরের মতো এবারো জেলার বেশির ভাগ জমিতে উপশী ধান ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের ধানের চাষ হবে বেশি হয়েছে। গাজীপুর সদর উপজেলার হাড়িনাল গ্রামের কৃষক মঞ্জু মোড়ল জানান, জমি প্রস্তুত, বীজ, সার, সেচ, ফসল কাটা ইত্যাদি মিলিয়ে যে পরিমাণ খরচ হয় সে তুলনায় প্রাপ্তি বহু কম। তা ছাড়া সময়মতো কৃষি শ্রমিক, ভাড়ায় জমি চাষের ট্রাক্টর পাওয়া পাওয়া যায় না। প্রতি বছরই এসব খাতে খরচ বাড়ছে। তার ওপর রয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close