খুলনা ব্যুরো

  ১১ জানুয়ারি, ২০২১

খুলনায় দাম বেড়েছে এলপি গ্যাসের

নতুন বছরে খুলনার বাজারে দাম বেড়েছে সব ধরনের এলপি (লিকুইড পেট্রোলিয়াম) গ্যাসের। সিলিন্ডার প্রতি এক লাফে বেড়েছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। গত বছর কয়েক দফা দাম বেড়ে বর্তমানে ৯৬০ থেকে হাজার টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। করোনা দুর্যোগে আয়-উপার্জন রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে, এ সময় গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে সংকট বেড়েছে মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত মানুষের।

এদিকে, নগরীতে সরকারিভাবে গ্যাস সিলিন্ডারের জোগান তলানিতে থাকায় বেসরকারি কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।

ব্যবসায়ী সূত্র জানায়, নতুন বছরের শুরু থেকেই খুলনার খুচরা বাজারে এলপি গ্যাসের দাম বেড়েছে আরো এক দফা। কয়েক দিনের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম সিলিন্ডার প্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে দৈনন্দিন খরচের পাল্লা আরেক দফা ভারী হলো। কারণ ছাড়াই মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি ভোক্তারা মানতে নারাজ।

সূত্র জানিয়েছে, খুলনায় মাসে গ্যাস সিলন্ডারের চাহিদা প্রায় ৪ লাখ। যার পুরোটাই সরবরাহ করে থাকে বেসরকারি কোম্পানিগুলো। পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপোর মাধ্যমে সরকারিভাবে সরবরাহ করা হয় সর্বোচ্চ ৫ হাজারের মতো। এরমধ্যে ২ হাজার সিলিন্ডার বিক্রি করে মেঘনা ডিপো, ১ হাজার ২০০ সিলিন্ডার বিক্রি করে পদ্মা ডিপো ও বাকিটা যমুনা ডিপো সরবরাহ করে।

নগরীর দক্ষিণ টুটপাড়া বড়খালপাড় বান্দা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী পলাশ স্টোরের মালিক মো. সিরাজুল ইসলাম পলাশ বলেন, বসুন্ধরা গ্যাস ৮৬০ থেকে বেড়ে ৯৭০ টাকা, ওমেরা ৮৫০ থেকে ৯৯০-১০০০, লাফস ৮৩০ থেকে ৯৮০ এবং জি-গ্যাস ৮০০ থেকে বেড়ে ৯৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে সিলিন্ডার প্রতি হঠাৎ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্ত ও সাধারণ ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই গ্যাসের ব্যবহার সীমিত করে বৈদ্যুতিক ও কাঠের ব্যবহার বাড়িয়েছেন।

বি এম গ্যাস কোম্পানির ডিলার নাজমুল জানান, বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। বাজার অস্থির। শিগগিরই স্বাভাবিক হবে কি না এমন কোনো তথ্য তার কাছে নেই। সেনা এবং ওমেরা গ্যাস কোম্পানির ডিলার পারভেজ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বেড়েছে। তার প্রভাব পড়েছে খুলনার বাজারে। পদ্মা ডিপোর এরিয়া ম্যানেজার আল মামুন বলেন, খুলনায় মাত্র ১২০০ গ্যাসের সিলিন্ডার তারা সরবরাহ করতে পারেন। যা চাহিদার তুলনায় কম।

দৌলতপুর ঋষিপাড়া মামা-ভাগ্নে ভ্যারাইটিস স্টোরের মালিক মো. শাহ্ আলম মৃধা বলেন, ১ জানুয়ারি থেকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে।

গ্রাহক অনুপ কুমার ঘোষ বলেন, ‘প্রতি ২০-২৫ দিন পরপর আমার একটা করে গ্যাস লাগে। গত মাসে যে গ্যাস ৮৮০ টাকায় কিনেছি, তা বর্তমানে ১ হাজার ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। গ্যাস নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে আছি।’

দৌলতপুর আঞ্জুমান রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, প্রায় ২০০ টাকা বেশি দিয়ে গ্যাস কিনতে হয়েছে। কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। সেখানে প্রশাসন নীরব।

সোনাডাঙ্গা এলাকার ভোক্তা মেহেদী মাসুদ খান বলেন, ‘কোনো ঘোষণা ছাড়াই হুটহাট করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। যে গ্যাস সিলিন্ডারের দাম ছিল ৭৮০ টাকা, তা গত ১০ দিন আগে কেনা হয়েছে ৮৮০ টাকা। এখন হাজারের ওপরে। এ ভোগান্তির শেষ নেই।

মেঘনা ডিপোর ম্যানেজার মো. আবদুল্লাহ বলেন, এখন তারা সরবরাহ করেন মাত্র ২ হাজার সিলিন্ডার। প্রতি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭৫ টাকা। ১৮৪ জন ডিলারের মাধ্যমে এ গ্যাস সরবরাহ করা হয় বলে তিনি জানান।

খুলনা এলপি গ্যাস ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি শেখ মো. তোবারেক হোসেন তপু বলেন, সরকারি গ্যাস না আসার কারণে বেসরকারি কোম্পানিগুলো জনগণকে জিম্মি করে ইচ্ছামতো দাম হাঁকাচ্ছে। এজন্য বাজার মনিটরিং জোরদার এবং অহেতুক মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close