সিলেট প্রতিনিধি

  ১৮ অক্টোবর, ২০২০

সালিসে সাক্ষ্য দেওয়ার জের

চোখ উপড়ে ঘাড় ভেঙে মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় গরুর পা কাটার ঘটনায় সাক্ষ্য দেওয়ায় মাদরাসাছাত্র রবিউল ইসলামের দুটি চোখ নষ্ট করে, ঘাড় ভেঙে ও শরীরের একাধিক স্থানে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। বর্বর এই খুনিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন নিহত রবিউলের বাবা মো. আকবর আলী। গতকাল শনিবার এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলের খুনিদের নিষ্ঠুরতার বর্ণনা দেন তিনি।

উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রহমাননগর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে ও স্থানীয় লতিফিয়া ইরশাদিয়া দাখিল মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রবিউল ইসলাম (১১) গত ১২ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় গাংগের পাড় এলাকায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু সে আর বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পাওয়ায় এলাকায় মাইকিং করান। গত সোমবার রাতে রবিউলের মামা শওকত আলী বিশ্বনাথ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

নিখোঁজের পরদিন ১৩ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় রামপাশা- বৈরাগীবাজার সড়কের বাল্লার ব্রিজের সেতুর একটি ডোবায় রবিউল ইসলামের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

স্থানীয়রা জানান, বছর খানেক আগে করপাড়া গ্রামের ছাদিকুর রহমান ও আবদুল কাদিরের ধানখেতে চলে যায় গোয়াহরি গ্রামের আবদুল হামিদের গরু। এ সময় ছাদিকুর রহমান ও আবদুল কাদির গরুকে ধরে পা কেটে দেন। বিষয়টি দেখে ফেলে রবিউল ইসলাম। সাক্ষী হিসেবে সে এক সালিস বৈঠকে বিষয়টি জানায়। এরপর থেকে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রায় সময় রাস্তায় পেয়ে রবিউল ইসলামকে মারধর করতেন ছাদিকুর রহমান।

৭ অক্টোবর মুরিকোনা হাওরে গরুর ঘাস কাটতে গেলে রবিউলকে ছাদিকুর রহমান মারধর করেন। এ নিয়ে ৮ অক্টোবর রহমাননগর গ্রামের গণি মিয়ার বাড়িতে আরেকটি সালিস বৈঠক হয়। ওই দিন বৈঠক শেষে ছাদিকুর রহমান রবিউল ইসলামকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান। হুমকি দেওয়ার মাত্র তিন দিনের মাথায় রবিউল ইসলাম খুন হয়।

এ ঘটনায় ১৩ অক্টোবর নিহতের বাবা আকবর আলী বাদী হয়ে করপাড়া গ্রামের ছাদিকুর রহমান ও আবদুল কাদিরসহ তিনজনের নাম উল্লেখ এবং আরো তিন থেকে চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে বিশ্বনাথ থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিন বিকালে মামলার আসামি উপজেলার করপাড়া গ্রামের আবদুল কাদিরের স্ত্রী মাজেদা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা এ বিষয়ে বলেন, এ ঘটনায় মাজেদা বেগম নামের একজন এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close