নিজস্ব প্রতিবেদক ও মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

  ১৮ অক্টোবর, ২০২০

দ্রুত এগোচ্ছে পদ্মা সেতু

* সবশেষ স্প্যানের ফিটিং শেষ * মঙ্গলবার বসছে ৩৩তম স্প্যান

পদ্মা সেতুর কাজ এখন আরো দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই কাজ এগোচ্ছে। এই সেতু নির্মাণে শুরু থেকেই নানা বাধাবিপত্তি এসেছে। এ কারণে সেতু নির্মাণ পিছিয়েছে। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে নভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ ভাইরাস। তবে প্রাণঘাতী করোনা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি এই বিশাল কর্মযজ্ঞে। চীনা কর্মীরা কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়ে কাজে যোগ দেওয়ায় সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। তা ছাড়া চীন থেকে যন্ত্রাংশও সময়মতো এসেছে। এদিকে, পদ্মা সেতুর সবশেষ স্প্যানের ফিটিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। শনিবার সকালে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে এই ফিটিংয়ের কাজ শেষ হয়। এ নিয়ে পদ্মা সেতুর ৪১টি স্প্যানের সবগুলোই প্রস্তুত হয়ে গেছে। এখন প্রস্তুত হওয়া ২এফ নম্বর স্প্যান পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ আবদুল কাদের। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর ৩২ স্প্যান এরই মধ্যে সেতুর ৩৩টি খুঁটির ওপর বসানো হয়েছে। সবশেষ স্প্যানটি ১১ অক্টোবর মাওয়া প্রান্তে বসানো হয়।

পদ্মা সেতু সূত্রে জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার ৩ ও ৪ নম্বর খুঁটির ওপর ৩৩তম স্প্যান বসানো হবে। এর ৫ দিন পর ৩৪তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর ৩০ অক্টোবর ৩৫তম বসানো হবে। নভেম্বর মাসের ৪ তারিখ ৩৬তম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ দিন অন্তর একটি করে স্প্যান বসানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। বাকি পাঁচটি স্প্যানও চলতি বছরই বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এর আগে পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে পিছিয়ে যায় ৩২তম স্প্যান বসানোর কাজ। তবে চার মাস পর পদ্মা সেতুতে গত ১১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর খুঁটির ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। এ নিয়ে সেতুর ৪ হাজার ৮০০ মিটার অংশ এখন দৃশ্যমান।

এর আগেও ১০ জুন সেতুর জাজিরা প্রান্তের ২৫ এবং ২৬ নম্বর খুঁটির ওপর বসানো হয় সেতুর ৩১তম স্প্যান।

পুরো সেতুতে বাকি রইল আর মাত্র ৮টি স্প্যান বসানোর কাজ। এ ছাড়া সেতুর জাজিরা প্রান্তে সবগুলো স্প্যান ইতোমধ্যেই বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। এরপর একে একে বসানো হয় ৩২টি স্প্যান।

৪২টি খুঁটির ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এরমধ্যে সবকটি খুঁটি এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড ও প্রপারটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (পিডিএল)। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালেই খুলে দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close