জুয়েল আশরাফের হাসির গল্প
তমাল স্যারের বুদ্ধি
আকিব আর সফিক দুজনেই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ক্লাসরুম থেকে খেলার মাঠ, সব জায়গায় দুজনে একসঙ্গে থাকে। স্কুলের পাশাপাশি পরিবারের সবাই তাদের দুষ্টুমিতে বিরক্ত। স্যাররা প্রায়ই তাদের শাস্তি দেন, তবু তাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি। পড়াশোনায় তাদের মনোযোগ কম। তারা কোনোভাবে পাস করেছে। এখন ওরা দুজনেই তৃতীয় শ্রেণিতে এসেছে। কিন্তু তার পরও ঠিকমতো লিখতে শিখতে পারেনি।
তমাল স্যার স্কুলের নতুন হেডস্যার হয়ে আসেন। আকিব আর সফিকের দুষ্টুমি দেখে তিনি তাদের ভালো করার সিদ্ধান্ত নেন। তমাল স্যার একে একে দুজনকেই নিজের ঘরে ডেকে কিছু প্রশ্ন করলেন। তমাল স্যার সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেখে বুঝতে পেরেছেন যে, দুজনেই ভালো ছাত্র, শুধু একটু মনোযোগ দেওয়া দরকার। অনেক ভাবনার পর স্যার একটা বুদ্ধি বের করলেন।
পরের দিন, আকিব আর সফিক আবার ক্লাসে দুষ্টুমি করছে। তমাল স্যার তাদের দেখে বললেন, আজ থেকে পুরো ক্লাসে তোমাদের দুজনকে আলাদাভাবে বসতে হবে। তোমাদের একসঙ্গে বসতে দেওয়া হবে না। যেদিন তোমরা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করবে সেদিন একসঙ্গে বসবে।
ছেলেমেয়েরা তমাল স্যারকে ভয় পায়। বাধ্য হয়ে আলাদা হতে হলো আকিব আর সফিককে। দুজনের পক্ষে একে অপরের সঙ্গে কথা না বলে থাকা কষ্টকর। ক্লাসে দুজনেরই ভালো লাগছে না। অনেক ভাবনার পর দুজনের তীক্ষè মনে একটা বুদ্ধি বের হলো।
এখন স্যার ক্লাসে আসার আগে আর চলে যাওয়ার পরে, দুজনেই তাদের কথাগুলো স্লিপে লিখে একে অপরকে পাঠাতে শুরু করে।
এভাবে কথা বলার সময় তাদের হাতের লেখারও উন্নতি হতে থাকে। এ ছাড়া তারা আবার একে অপরের সঙ্গে বসার আশায় তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে শুরু করে।
তিন মাস পর স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা। তমাল স্যার ক্লাসে ফলাফল ঘোষণা করলেন। আকিব আর সফিক সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পাস করেছে। পুরো ক্লাস তাদের জন্য হাততালি দিচ্ছে।
তমাল স্যার দুজনকেই বললেন, আজ তোমাদের দুজনের সাহসের জয় হয়েছে। তাই তোমাদের শাস্তি শেষ করছি। তবে মনে রাখবে, ভবিষ্যতে কোনো অভিযোগ পেলে আবারও একই শাস্তি পাবে।
আকিব আর সফিক বলল, স্যার, আমরা কথা দিচ্ছি কখনো অভিযোগ করার সুযোগ দেব না।
তাদের দুজনের মুখেই আত্মবিশ্বাসের দীপ্তি। তমাল স্যার খুশি হলেন, তার কৌশলে দুটি ছেলের জীবন উন্নতির দিকে এগিয়ে গেছে।
"