reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০২ অক্টোবর, ২০২২

গাজী আরিফ মান্নানের হাসির গল্প

প্রেমের সরলীকরণ!

কেস-১

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় নতুন ভর্তি হওয়া একজনকে পছন্দ হয়ে যায়। পরে খবর নিয়ে জানলাম আমাদের গ্রামের তথা আমার বাড়ির সামনের হাসপাতালে ওর মা নতুন জয়েন করেছে। অনেক সুন্দর চেহারা এবং মায়াবী চোখ তার, যেন দৃষ্টি ফিরতেই চায় না! দুই-এক দিন পর কয়েকজন মিলে তার সঙ্গে পরিচিত হলাম এবং তখন থেকে শুরু পথ চলা। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও গান গাইতো, অসাধারণ গানের গলা! ক্লাস ফাইভের পরীক্ষা দিয়ে তার ফ্যামিলি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যায়। অনেক খুঁজেছি আর দেখা হয়নি...!

কেস-২

ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর এক মেয়ের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক বা বন্ধুত্ব তৈরি হয়। সময়ের আবর্তে ক্লাস এইটে এসে আকারে ইঙ্গিতে আমাকে কী জানি কিছু বলতে চায়! এক দিন দেখলাম বইয়ের ভেতর একখানা কাগজ! পরে দেখি ওমা এটা তো চিঠি! চিঠিতে আবেগমাখা ভালোবাসার কথামালায় অনেক কিছুই লিখেছে। কাগজটা আমার বন্ধুদের দেওয়াতে জানাজানি হয়ে যায়। ফলে লজ্জায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়! গ্রামের মেয়ে তাই এই সম্পর্কে জড়ানো হয়নি, যদি কেউ জেনে যায়!

কেস-৩

নবম শ্রেণিতে ওঠার পর সবার মাঝে প্রেমিক প্রেমিক ভাব। সবাই জুটি খুঁজতে ব্যস্ত, আমি প্রেম করব না এটা একদম ফাইনাল। কিন্তু জানুয়ারির শেষের দিকে অনেক সুন্দর একজন মেয়ে ভর্তি হয়েছে। সবাই চাইছে তার সঙ্গে কীভাবে ভাব জমানো যায় কিন্তু কারো সাহস হচ্ছে না। সবাই আমাকে পাঠাল তার সঙ্গে কথা বলার জন্য, আমি গিয়ে পরিচিত হলাম। এভাবে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিদিন কথা বলতাম, তখন থেকে আস্তে আস্তে তার প্রতি ভালো লাগা। এক দিন আমাকে কথা আছে বলে এক টুকরা কাগজ আমার হাতে দিল, পড়ে দেখলাম প্রেমের চিঠি! ওই সময় তাকে কিছু বলিনি! এর মাঝে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হলে আবার যোগাযোগ হয়, কথা হয়। কিন্তু চিঠির বিষয়ে আমি আর কিছু বলি না। কিছুদিন পর রেজাল্ট প্রকাশ হলে আমি পাস করে কলেজে ভর্তি হয়ে যাই। সম্পর্ক সেখানেই ইতি টানতে হয়েছে, কারণ সে ফেল করেছে ...!

কেস-৪

আমাদের কলেজে ছেলে মেয়ে একসঙ্গে বসতাম। একটি মেয়ে ছিল অসাধারণ! যেমন সুন্দর তেমনি তার শারীরিক গঠন। প্রথম থেকেই মেয়েটিকে ভালো লেগে যায়। আমি মেয়েটির ঠিক এক টেবিল পেছনে বসতাম, সে কী করছে তা দেখার জন্য এবং মাঝে মাঝে ভাব জমানোর চেষ্টা করতাম। কিছুদিন পর কয়েকজন বন্ধুর সাহায্যে মেয়েটির সঙ্গে খুব ভাব জমাতে শুরু করলাম। এভাবে কথা বলতে বলতে সম্পর্ক এগিয়ে যায়। দ্বিতীয় বর্ষে ওঠার পর পরীক্ষার চাপে প্রেমের সমীকরণ আর মেলে না! ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পর হারিয়ে ফেলি তাকেও ...!

কেস-৫

অনার্স ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে পরিচয় এবং সেখান থেকে কথোপকথন শুরু। সে চান্স পেয়ে ভর্তি হলো এক ডিপার্টমেন্টে আর আমি অন্য ডিপার্টমেন্ট। এর ফলে মাঝে মাঝে দেখা হয়, কথা হয়। খুব একটা দেখা হয় না কারণ সে প্রতিদিন কলেজে আসতে পারে না, বাড়ি অনেক দূরে হওয়ায়। প্রেমটা জমিয়ে উঠতে না উঠতেই দুঃসংবাদ পেলাম তার বিয়ের কথাবার্তা চলছে, এক দিন হুট করেই তার বিয়ের কার্ড নিয়ে হাজির। ফলাফল সম্পর্কের ইতি টানতে হলো...!

কেস-৬

চাকরিতে জয়েন করার পর একজনের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। প্রায়ই তার সঙ্গে চ্যাট হয় মেসেঞ্জারে। তাকে কখনো আমি দেখিওনি ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। তিনিও শিক্ষক কোনো এক উপজেলার। মোবাইলে অবসর সময়ে চ্যাট করতে করতে সময় কেটে যেত। এভাবেই তিন-চার মাস চলল। একপর্যায়ে তাকে না দেখেই ভালো লেগে যায়। পরে তাকে দেখার সিন্ধান্ত নিই আমি হুট করে। আমার সঙ্গে নিই আরো কয়েকজনকে অবশ্য তাদের জানানো হয়নি কোথায় যাচ্ছি কেন যাচ্ছি! পরে তার স্কুলে পৌঁছানো মাত্র কয়েকজন শিক্ষক ভয় পেয়ে যায় অফিসার এলো কি-না! আবার একটু পরে চিন্তা করেছে যে, মনে হয় ম্যাডামকে দেখতে এসেছে! তাকে এই প্রথম কাছ থেকে দেখে খুব পছন্দ হয়ে যায়। বেশি কিছু বলা হয় না। যদি অন্যরা তা আবার বুঝে ফেলে! দুঃখের বিষয় এর কয়েকদিন পরই বিয়ের প্রস্তাব আসে এবং এক সময় বিয়ে হয়ে যায়...!

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close