reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ মে, ২০২২

শফিক শাহরিয়ারের হাসির গল্প

খ-তে খাদক

খাইরুল বেশ কয়েক বছর ধরে শহরে থাকে। বাড়ি যাওয়ার জন্য সপ্তাহ খানিক আগেই প্রস্তুতিপর্ব শেষ। কদিন পরেই ঈদ। এবার একটু বেশি সময় হাতে নিয়ে বাড়ি গেল। সারা এলাকায় খাদক নামে পরিচিত। খাদক উপাধি তার মতো আর কারো কানের কাছে এত ঘুর ঘুর করে না। সস্তাদামি খাদক নয়। নামি-দামি খাদক। খাদক বলে সবাই তাকে খুব কেয়ার করে। ছোটবেলা থেকেই খাবার-দাবারে বেশ পটু।

ঈদের দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠল। খাই খাই শব্দে দিন শুরু হয়। সকালের নাশতায় কয়েক ডজন রুটি, সঙ্গে অপরিমিত সেমাই, পায়েস, ক্ষীর- আরো কত কী! সে একদম ডায়েট কন্ট্রোল করতে পারে না। দিন দিন মোটা হয়ে যাচ্ছে। সেদিকে খেয়াল রাখার কোনো সময় পায় না। দুপুরে সবাই ঘোরাঘুরি বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় খাওয়ার কথা ভুলে গেলেও সে কখনো ভোলে না। ভাত, পোলাও, বিরিয়ানি বেশি পরিমাণেই খায়। সবাই জানে গরু, খাসী ও ভেড়ার গোশত তিনটাই তাকে একসঙ্গে দিতে হয়। নইলে সে এক গ্রাস খাবার মুখে তোলে না। সঙ্গে সবজি বা সালাদ খেয়ে পেট ভরাবে এমন বোকাসোকা নয়। রাতের খাবারেও দুপুরের মেন্যু। ঈদের প্রথম দিন বাড়িতেই পেটপুরে খায়।

ঈদের পরদিন থেকে বন্ধু-স্বজন ছাড়া আর কোথাও নড়াচড়ার সুযোগ থাকে না। প্রতিবার এক এক করে দিনগুলো রুটিন করা থাকে। কারো দাওয়াত মিস করেছে, এমন রেকর্ড তার জীবনে নেই। খেতে বসলে খায় আর খায়। কোনো দিকে তাকিয়ে অযথা সময় নষ্ট করে না। চোখে ধরে না, পেটে আঁটে না। খাবারে তার কোনো অরুচি নেই। ভাজাপোড়া হলে আরো গপাগপ খায়। গোশত হলে তো কোনো কথায় চলে না। পাশাপাশি ছোট-বড় নানা জাতের মাছের ঝোল। এলাকার মধ্যে তাকেই বেশি দাওয়াত খেতে হয়।

অবশেষে দাওয়াত খেয়েদেয়ে বাড়ি এলো। সারা রাত ঘুমাতে পারল না। পেট মোচড় দিতে শুরু করল। সে আগে কোনোদিন পেট নিয়ে বিপাকে পড়েনি। আজ কেন বদহজম হচ্ছে বিছানায় আর শুয়ে বা বিশ্রাম নিতে পারছে না। বাথরুমে যেতে যেতে কাপড়-চোপড় নষ্ট করে দিল। বাথরুমে কতবার গেল, সে হিসাব নিজেই জানে না। বাড়িতে কয়েকজন নতুন মেহমান আছে। পরদিন সকাল হতে না হতেই বাড়িতে চেঁচামেচি শোনা গেল। সবার ঘুম ভাঙল। ঘর থেকে বাথরুম অবধি বেশ নাজেহাল। সে ভাবল, আর জীবনে কোনোদিন এত বেশি খাব না। বাপ রে বাপ! আজ মেহমানের জন্য বেঁচে গেলাম!

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close