ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি

  ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ঢাকা

ধামরাইয়ে নিয়ম না মেনে ফের ইটভাটা চালু

ঢাকার ধামরাইয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন চৌদ্দটি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দিলেও সেগুলো পুনরায় চালু করেছেন ভাটা মালিকরা। আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে ভাটাগুলোতে চলছে ইট উৎপাদন ও বিক্রি। কোনো কিছুই বন্ধ হয়নি ভাটাগুলোতে।

গত ২৪ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর ধামরাই উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের অভিযান পরিচালনা করে মাহী ব্রিকস ও স্বর্ণ ব্রিকস এবং সূয়াপুর ইউনিয়নের দেলধা এলাকায় সততা ব্রিকস-৪ ও সততা ব্রিকস-৫ এবং পাশেই একে ব্রিকস, হিরু এন্টারপ্রাইজ ও সোহাগ ব্রিকস বন্ধ ঘোষণা করে।

এরপর ৮ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তর উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের মধুডাঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মদিনা ব্রিকস, সাজেদা ব্রিকস, ফারুক ব্রিকস, মাস্টার ব্রিকস ও গাংগুটিয়া ইউনিয়নের রাহাত ব্রিকস এদের মধ্যে একটি ভাটার চিমনি ভেঙে ভাটা বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর ২২ জানুয়ারি কুশুরা ইউনিয়নের নবগ্রাম এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নাছিমা ব্রিকস ও মদিনা ব্রিকস এর দুটি ভাটার চিমনি ভেঙে ভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন।

এসব ইটভাটায় অভিযানের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করে বাযুদুষণ ও ফসলি জমির মাটি কাটার অপরাধে ভাটাগুলোকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এইসব ভাটাগুলোর মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধু মাহী ব্রিকস এর সামনে ভাটাটির লাইসেন্স ও ছাড়পত্র বাতিলের নোটিশ ইটভাটার সামনে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আরো বলা হয়েছে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো রকমের ইট বিক্রি ও উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলা হয়।

কিন্তু অভিযানের কয়েকদিন যেতে না যেতেই দেখাগেছে একে ব্রিকস, হিরু এন্টারপ্রাইজ ও সোহাগ ব্রিকস তিনটি ভাটায় ইট পোড়াতে দেখা যায়। এছাড়া নুর ব্রিকস, নাছিমা ব্রিকস ও মদিনা ব্রিকস পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে তিনটি ভাটার চিমনি ভেঙে দিয়েছিল। পরে সেগুলো মেরামত করে আবার ইট উৎপাদন ও ইট পোড়ানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে নুর ব্রিকস এর মালিক নুরইসলাম বলেন, এই বছর আমার অনেক টাকা ইনভেস্ট করা হয়েছে। ভাটা না চালাতে পারলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে চিমনি মেরামত করে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে নাছিমা ব্রিকস এর মালিক জাহিদ হোসেন বলেন, একটি ভাটা চালু করতে কয়েক কোটি টাকা লাগে। এছাড়া ইট তৈরি শ্রমিকদের অগ্রিম টাকা দিয়ে কাজে আনতে হয়। এখন যদি ভাটা বন্ধ করা হয় তাহলে আমার অনেক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই ভাটার চিমনি পুনরায় মেরামত করে চালু করা হবে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে একে ব্রিকস এর ব্যবস্থাপক হযরত আলী বলেন, আমার ভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র ও ডিসি লাইসেন্সের মেয়াদ রয়েছে। কিন্তু ইট তৈরির কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত মাটিকাটার অনুমতি না থাকায় পরিবেশ অধিদপ্তর আমাদের ভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।

এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ইলিয়াস মাহমুদ বলেন, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে গুড়িয়ে দেওয়া ভাটাগুলো পুনর্নির্মাণ এবং ভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করার কোনো সুযোগ নেই।

এই বিষয়ে ধামরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাফফাত আরা সাঈদ বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের বন্ধ করা ভাটাগুলো পুনর্নির্মাণ করে পরিচালনা করতে পারবে না। যদি কেউ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close