এম এ সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা)

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

তালতলী বগিরদোনা খাল

সেতু ভেঙে খালে, ১০ গ্রামবাসীর ভোগান্তি

বরগুনার তালতলী উপজেলার শহরস্থ মাছ বাজার সংলগ্ন বগীর দোনা খালের উপর নির্মিত তালতলী উপজেলা সদর এবং নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের সঙ্গে সংযুক্ত লোহার সেতুটি গত বৃহস্পতিবার রাতে ধসে পড়েছে। আকস্মিক সেতুটি ধসে পড়ায় গত শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলা সদরের সঙ্গে নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম এবং ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে।

জানা গেছে, ২০০১ সালে উপজেলা এলজিইডি তালতলী উপজেলা সদর ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য তালতরী শহরের মাছ বাজার সংলগ্ন বগীর দোনা খালের ওপর ৪০ লাখ টাকা ব্যায়ে ১২০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি লোহার সেতু নির্মাণ করে। সেতুটি নির্মাণের পর ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় সিডরসহ বিভিন্ন সময় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নির্মাণের দীর্ঘ ২৫ বছরেও সেতুটি সংস্কার না করায় সেতুটি এক রকম বেহাল অবস্থায় পড়ে ছিল। বেহাল এই সেতু পারাপার হয়ে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের খোট্টার চর, বড় অঙ্কুজান পাড়া, জয়ালভাঙ্গা ও তেতুল বাড়িয়াসহ ১০ গ্রামের মানুষ উপজেলাসদরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করত। এবং এই সেতু পারাপার হয়ে স্থানীয় বাসিন্দাসহ নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের শত শত শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন তালতলী সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তালতলী সরকারী কলেজে আসা যাওয়া করত। সেতু ভেঙে পড়ায় তাদের স্কুল এবং কলেজে আসা যাওয়াও এখন বন্ধ হয়ে গেছে। সেতুটির পশ্চিম পাড়ে রয়েছে বড় অঙ্কুজান পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি মাদরাসা ও চারটি এতিমখানা। সেতু ধসে পড়ায় তারাও পড়েছে বিপাকে।

তালতলী সরকারী কলেজের নারী শিক্ষার্থী খোট্টার চর গ্রামের মরিয়ম আক্তার বলেন, সেতু ধসে পড়ায় আমরা এখন কলেজে যেতে পারবো না। কলেজে যেতে না পারলে আমাদেও লেখা পড়ার অনেক ক্ষতি হবে।

ঊড় অঙ্কুজান পাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, আটবার করার লইগ্যা মোগো হ¹োল সময় মোগো শহরে যাইতে অয় হয়। ব্রিজ ভাইঙ্গা পড়ায় মোরা এহন ক্যাম্মে বাজারে যামু আটবাজার করমু।

খোট্টার চরের আইয়ূব নামে এক ষাটোর্ধ কৃষক বলেন, ‘মোরা এই ব্রিজ পাড়াই তালতলী শহরের অফিসে যাইতাম, রোগী লইয়া ডাক্তার দেহাইতে যাইতাম। এহন আমরা ক্যাম্মে যামু। ডাক্তার দেহাইতে না পারলে মোরাতো মইর‌্যা যামু।’

তালতলী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন ওই সেতুটি নির্মাণ করেছিল। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলেও তালতলীর যারা জনপ্রতিনিধি ছিল তারা কেউ এই সেতুটি নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সেতুটি এখন ধসে পড়ায় ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এখন দুর্ভোগে পড়েছে। তিনি সেতুটি দ্রুত নির্মানের দাবি জানান।

তালতলী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সেতুটি আগে থেকেই অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেতুটি ধসে পড়েছে। বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা জানান, সকালে সেতুটি ভেঙে পড়ার সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে নিশানবাড়িয়ার ও বড়বগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে। আজকের মধ্যেই ওই ১০ গ্রামের মানুষসহ শিক্ষার্ধীদের চলাচলের জন্য বিকল্প যোগাযোগের জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে। পরে ভেঙে যাওয়া সেতুর জায়গায় স্থায়ীভাবে গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close