সাজাদুল ইসলাম, উলিপুর (কুড়িগ্রাম)
উলিপুর
বোরো চাষে ব্যস্ত কৃষক বাম্পার ফলনের আশা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে বোরো ধানের আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ঠান্ডা আর শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেচ, হালচাষ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন এবং রোপণের কাজ করছেন তারা। তবে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। বৃদ্ধি পেয়েছে শ্রমিকের মজুরি। সবমিলিয়ে বোরো চাষে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। তার পরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় একটি পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে চলতি এইমৌসুমে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে ২২ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমি। এরমধ্যে হাইব্রিড ৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর, উফশী ১৪ হাজার ৫০ হেক্টর ও স্থানীয় জাত ১৫০ হেক্টর জমি। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ছয় হাজার ৫০০ হেক্টর। এবারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৪৩২ মেট্রিক টন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, মাঠে মাঠে চলছে বোরো ধান লাগানোর ব্যস্ততা। কৃষকরা বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করে জমিতে রোপণ করছেন। কেউ জমিতে পানি আটকানোর জন্য আইল বাঁধছেন। গভীর, অগভীর পাম্প ও শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছেন। গরুর হাল, ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছেন। কেউ চাষ করা উঁচু নিচু জমি সমান করছেন। সবমিলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যেন কৃষকদের দম ফেলার সময় নেই। চাষিরা গত বছর বোরো ধানের দাম ভালো পাওয়ায় এবারে ধান চাষ জোরেশোর করছেন।
শীত ও কুয়াশা অপেক্ষা করে কাজে আসা উলিপুর পৌরসভার কাশির খামার গ্রামের দিন মজুর হাছেন আলী বলেন, ঠান্ডা অপেক্ষা
করে পেটের দায়ে বোরো রোপন করতে এসেছি। সারাদিন কাজ করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাই। জিনিসপত্রের যে দাম তাতে সংসার চালানো যাচ্ছে না।
উলিপুরে পৌরসভার নারিকেল বাড়ি স›ন্যাসীতলা গ্রামের কৃষক খগেন চন্দ্র জানান, তিনি প্রায় ৪ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ধানের বীজ রোপন, কাদা করা, ওষুধ বাবদ এক হাজার টাকা, জমি চাষ করা বাবদ ৮২৫ টাকা, দিনমজুর কর্তৃক চারা রোপন ১ হাজার ৫০ টাকা, চাষের সার কেনা বাবদ ১ হাজার ৫০০ টাকা, ওষুধ প্রয়াগ ৪০০ টাকা, নিড়ানী দেয়া ৮০০ টাকা। এছাড়া ৩ মাস পানি সেচ বাবদ ২ হাজার ৬৪০ টাকা, ধান কাটা-মাড়াই ৪ হাজার টাকা সহ অন্যান্য আরো ২ হাজার টাকা। এ নিয়ে প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ বাবদ সর্বমোট খরচ হবে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়া গেলে এই খরচ আর পরিশ্রম দুই সার্থক হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, কৃষকদের পরিবেশবান্ধব লাইন-লোগো পদ্ধতি ব্যবহার করে চারা
রোপণের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কারণ এতে রোগবালাই কম হবে এবং ফলন বৃদ্ধি পাবে।
"