কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

জয়পুরহাটের কালাই

কমেছে দলিল রেজিস্ট্রেশন বিপাকে ক্রেতা-বিক্রেতা

জয়পুরহাটের কালাইয়ে অনলাইন ভূমি সেবার সার্ভারটি চালু থাকলেও ওয়েবসাইডে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। আবার সময়ে সময়ে প্রবেশ করা গেলেও কাজে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। ফলে নামজারি, খাজনা আদায়, জমির ই-পর্চা সেবা, ভূমি উন্নয়ন করসহ অনলাইন ভূমি সেবার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া খাজনা দিতে না পারায় জমি বেচাকেনায় স্থবিরতা নেমে এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিভিন্ন দলিল লেখক, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের স্ট্যামভেন্ডার বিক্রেতা, ভুক্তভোগীসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে শুরু করে প্রায় ৪ মাস ধরে অনলাইনে ভূমিসেবা সার্ভারটি সবসময় চালু না থাকায় জমির নামজারি, খাজনা আদায়, জমির ই-পর্চা সেবা, ভূমি উন্নয়ন করসহ অনলাইন ভূমিসেবার সব কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যার ফলে এ উপজেলায় বিভিন্ন কারণে জমি ক্রয়/বিক্রয় করতে আসা বহু মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন।

উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের বিয়ালা গ্রামের শাখিউল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকাতে থাকি রেগুলার বাড়িতে আসা হয় না। আমার বাবা বেঁচে নেই তাই জমি-জমার কাজগুলো নিজেকেই করতে হয়। কিন্তু সার্ভারের সমস্যার কারণে জমির খাজনা-খারিজের কাজ সঠিক সময় করতে না পারায় বারবার আসা-যাওয়ার চরম বিড়ম্বনায় পড়েছি।

উপজেলার এলতা ইমামপুরের গ্রামের রতন জানান, সে প্রায় দুই আড়াই মাস আগে তাদের জমি খারিজ করার জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু সার্ভারের সমস্যার কারণে তার খারিজ সম্পন্ন হয় নাই।

কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের পাঁচগ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী জানান, মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য ১৮ শতাংশ জমি বিক্রির জন্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রায় ৩ মাস আগে খাজনা প্রদানের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সার্ভারের কারণে তিনি এখনও খাজনা দিতে পারেননি। অফিসে গেলে সার্ভারের সমস্যার কথা বলে।

কালাই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের স্ট্যামভেন্ডার বিক্রেতা ফজলুর রহমান, সানোয়ার হোসেন নাজু, সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সালামসহ অনেকে জানান, আগে অফিস ছুটি ছাড়া প্রতিদিন গড়ে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকার স্ট্যাম্প বিক্রি হত। বর্তমানে এখন যে অবস্থা, গড়ে ৩ হাজার টাকা বিক্রি করা কঠিন।

কালাই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক জিয়াউর রহমান জিয়া, হাফিজার রহমান, সোহেল, মিজানুর রহমান, গোলাম, জাফর আলীসহ অনেকে জানান, আগে জমি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে গড়ে প্রতিদিন একশর অধিক। কিন্তু এখন ২০-২৫টি দলিল পার হয় না। অথচ নিজ জেলার পাশের উপজেলায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

কালাই সাব-রেজিস্ট্রার রাফায়েল ফাতেমী জানান, আগে দলিল মূলে জমি রেজিস্ট্রি করা হত। বর্তমানে ২০২৩ সালে একটি ভূমি আইনে নতুন নীতিমালা করা হয়েছে। এতে করে অনলাইনে জমির খারিজ না দেওয়া পর্যন্ত জমি রেজিস্ট্র্রেশন করা হচ্ছে না। সারা দেশেই সার্ভারের কাজ একযুগে শুরু হওয়ার কারণে একটু বিলম্বিত হচ্ছে। তবে শুনতে পেলাম সার্ভার অনেকটা উন্নতির পথে।

এ বিষয়ে কালাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জানান, কিছুদিন সার্ভারের কিছুটা সমস্যা ছিল, তবে এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। মৃত ব্যক্তির নামে খাজনা নেওয়ার কোনো বিধান নেই। মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশদের একমত হয়ে সাব-রেজিস্টারের মাধ্যমে বন্টন করে নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে দ্বিমত দেখা দিলে দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশদের প্রাপ্য বণ্টন করে নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close