আকিকুল ইসলাম, ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ)
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া
উন্নয়ন হয়নি বাসস্ট্যান্ডের ভাঙাচুরা গাড়ির দৌরাত্ম্য

ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সীমান্তবর্তী উপজেলা ধোবাউড়া। নানা সময় এই জনপদে রাস্তাঘাটসহ বিভিন্নখাতে উন্নয়ন হলেও পরিবর্তন আসেনি পরিবহন খাতে। বছরের পর বছর ধরে চলছে ফিটনেসবিহীন লক্কর-জক্কর মিনি বাসে ধোবাউড়া-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে যাতায়াত করে যাত্রীরা। গত ১৫ বছরেও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ধোবাউড়া নতুন বাসস্ট্যান্ডে।
যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্য রাস্তায় যেসব বাস চলাচল করার অনুমতি নেই, সেই সব বাস চলে ধোবাউড়া-ময়মনসিংহ সড়কে। দিনের পর দিন যাত্রীদের ভোগান্তী কারও নজরে পড়ে না। বাসের সিটগুলো ছোট হওয়ায় যাত্রীরা সোজা হয়ে বসতেও পারে না। ধুলোবালি লেগেই থাকে। দূর্গন্ধে বসে থাকাও কঠিন। এতে যাত্রী হয়রানি চরম আকার ধারণ করেছে।
এদিকে বিকল্প কোনো পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে চলাচল করে সাধারণ মানুষ। ফিটনেসবিহীন ভাঙাচুরা বাসের ঝাঁকুনিতে আতংক নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করছে ময়মনসিংহ শহরে। গাড়ির ফিটনেস না থাকায় বিভিন্ন সময় ঘটছে দূর্ঘটনা। পরিবহন খাতের এ অচলাবস্থা নিয়ে চরম ক্ষুব্ধ যাত্রী।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি বিকালে ময়মনসিংহ থেকে ধোবাউড়াগামী ফিটনেসবিহীন যাত্রীবাহী একটি বাসের চাকা পাংচার হয়ে একটি মোটরসাইককে চাপা দেয়। ঘটনা স্থালেই মারা যায় মোটরসাইকেল আরোহী ধোবাউড়া হাসপাতাল মোড়ের ওষুধ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল। গুরুতর আহত হয় তার স্ত্রী সুমি আক্তার। এই দূঘর্টনায় ধোবাউড়া উপজেলা জুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গত ১৫ বছরেও কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি ধোবাউড়া নতুন বাস স্ট্যাশনে। সরকারীভাবে ইজারা নেওয়া হলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। নেই যাত্রী ছাউনি। যাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করে। নেই ভাল মানের একটি শৌচাগার। বাস স্ট্যাশনের উন্নয়ন না থাকায় রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে বাস। এতে ভোগান্তিতে পড়ে পথচারীরা।
রহিম মিয়া নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ধোবাউড়া বাস স্ট্যাশনের কথা কি বলবো, এতটায় খারাপ বাস এক ঘণ্টার রাস্তা তিনঘণ্টায় যেতে হয়, বসা যায় না।’ আরেক যাত্রী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ধোবাউড়ায় ভোগান্তির আরেক নাম বাসস্টোশন, কিন্তু ধোবাউড়ার কোনো নেতা ও প্রশাসন এসব দেখে না।’
ধোবাউড়া বাস কাউন্টার মাস্টার মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ড সংস্কার না থাকায় ভাল মানের বাস আনা যায় না, তাছাড়া রাস্তাঘাটও ভাল না।’ বাসস্ট্যান্ডের পরিচালক আ. কুদ্দুস বলেন, ‘রাস্তাঘাট ও বাস স্ট্যাশনের উন্নয়ন হলে ভাল মানের বাস চালানো সম্ভব।’
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের মিটিং এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।’
"