নজরুল ইসলাম জিসান, ইবি

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫

ইবিতে অভিযোগ

নিয়মবহির্ভূত অধ্যাপকের শিক্ষাছুটি বাতিল

গবেষণার কাজে বিদেশে থাকা অবস্থায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. জহুরুল ইসলামের শিক্ষা-ছুটি বাতিল করা হয়েছে। একে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এছাড়া অধ্যাপককে অবগত না করেই বেতন বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এতে বিপাকে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন ওই অধ্যাপকের।

এদিকে ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদনের দুই মাস পার হওয়ার পর তা মঞ্জুর হয়নি বলে প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে। এমনকি এক মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. জহুরুল ইসলাম। গত বুধবার রাত ১০টার দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক ভার্চুয়াল

সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন

তিনি।

লিখিত বক্তব্যে ড. জহুরুল বলেন, তিনি ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ডেকোটায় ইন্সট্রাকশনাল ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়ে এমএস দুই বছরের ডিগ্রিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন। তাই ২০২৩ সালের ১৭ মে ইবির ছুটি বিধিমালা অনুযায়ী এক বছরের জন্য সবেতনে শিক্ষা ছুটির আবেদন করলে স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি এজেন্ডাভূক্তও হয়। তৎকালীন প্রশাসন তা পিএইচডি ডিগ্রি থাকায় এম.এস ডিগ্রির জন্য ছুটি অনুমোদন করেনি। পরে তিনি এক বছরের জন্য ‘স্যাবাটিক্যাল লিভ’র জন্য আবেদন করলে ওই বছরের ৩০ জুলাই তা মঞ্জুর করে কর্তৃপক্ষ। এদিকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রজেক্টে রিসার্চ অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় একই বছরের ৯ আগস্ট স্যাবাটিক্যাল লিভের পরিবর্তে ছুটি বিধি অনুযায়ী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা প্রজেক্টে কাজের জন্য সবেতনে শিক্ষা ছুটির আবেদন করেন ড. জহিরুল। এতে স্ট্যান্ডিং কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত এক বছরের সবেতনে শিক্ষা ছুটি মঞ্জুর করেন।

এদিকে নিয়ম অনুযায়ী ২০২৪ সালে ২৭ জুলাই চলমান শিক্ষাছুটির এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করলে তা স্ট্যাডিং কমিটির সভায় এজেন্ডাভূক্ত হয়। কিন্তু এই ছুটি মঞ্জুর একটি রুটিন ওয়ার্ক হওয়া সত্ত্বে দুমাসের বেশি সময় পরে তাকে চিঠি দিয়ে ছুটি মঞ্জুর হয়নি মর্মে জানানো হয়। সেই সঙ্গে এক মাসের মধ্যে কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।

অধ্যাপক ড. জহুরুল জানান, ‘সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে আমাকে অবগত না করে আমার বেতন বন্ধ

করা হয়। পরে গত ৩০ অক্টোবর বিষয়টি পুনঃবিবেচনার জন্য জন্য আবেদন করি। এবং উপাচার্য স্ট্যান্ডিং কমিটির এজেন্ডাভূক্ত করেন। কিন্তু

গত ৯ ডিসেম্বর উপ-উপাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আমার আবেদন আলোচনারই সুযোগ দেওয়া হয়নি।’

বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারার দাবি করে ড. জহিরুল বলেন, ‘মিটিংয়ের চেয়ার থেকেই এ রূপ ভাষ্য দেওয়া হয়েছে যে, এটা একটা অবৈধ ছুটি, কীভাবে এই ছুটি দেওয়া হলো তা তদন্ত করতে হবে এবং

যারা ছুটি দিয়েছেন তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে। আমি আশঙ্কা করছি, আমার বিষয়ে যেকোনো ধরনের নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে প্রশাসন

কুণ্ঠাবোধ করবেন না। আমার বেতন বন্ধ করে

দেওয়ার কারণে আমার পরিবার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

জানতে চাইলে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার তৌহিদুল আনাম বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, আমি এমন কিছুই শুনিনি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচাযের্র সাথে কথা বললে তারা কিছু জানেন না বলে জানান। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই আমি কিছু বলতে পারব না। কেন ওনার ওনার ছুটি বাতিল হল তা ফাইল-পত্র খুঁজে দেখতে হবে। তবে ওনি ছুটির পাওয়ার যোগ্য হলে অবশ্যই ছুটি পাবেন।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close