শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
মামলাকে কেন্দ্র করে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
ঝিনাইদহের শৈলকুপা
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় হত্যা ও ধর্ষণ মামলাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুইটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কাশিনাথপুর গ্রামে এই সংর্ঘষ ঘটে।
এতে নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
উপজেলার কাশিনাথপুরে গ্রাম্য দলাদলিকে কেন্দ্র আওয়ামী লীগের দুই সামাজিক মাতব্বর ইউপি সদস্য আকমাল খানের সঙ্গে সাইফুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে চলা বিরোধের জেরে ওই সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত বছরের ২৪ জুলাই আকমাল খানের সমর্থকেরা সাইফুল ইসলামের ছেলে রানা আহমেদকে কুপিয়ে হত্যা করে। এই ঘটনার কয়েকদিন পর সাইফুল ইসলামের সমর্থক সাব্বির (১৮), সাব্বির (১৯) ও বাচ্চু (২০) নামের তিন যুবক প্রতিপক্ষ সমর্থকের স্কুল পড়ুয়া এক মেয়েকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। সেই মামলায় অভিযুক্তরা জেলহাজতে আছেন। ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে বাদী ও সমাজের লোকজনদের কয়েকদিন ধরেই হুমকি দিয়ে আসছিল সাইফুল মন্ডলের সমর্থকেরা।
এদিকে শনিবার সকালে আকমাল খানের সমর্থক সুজাত বিশ্বাসকে কাশিনাথপুর সেতু এলাকায় মারধর করেন প্রতিপক্ষরা। পরে এই খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কিছুক্ষণ পরই দুইটি পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আছালত খান, সেলিম খান, নিজাম খান, তাইজেল খান, গাজের উদ্দিন, সুজাত, রোজিনা খাতুন, ওমর আলী, কুলসুম বেগম, সাদ্দাম হোসেন, তুহিন খান, ইসলাম খান, হোসাইন খান এবং আমির মণ্ডলসহ উভয় গ্রুপের অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে রোজিনা খাতুন ও আছালত খানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। অন্যদের শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য আকমাল খানের সর্মথক হাফিজুল বিশ্বাস বলেন, ‘হত্যা মামলায় আমার সমর্থকেরা জেলহাজতে থাকার সময় প্রতিপক্ষের লোকজনেরা ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এছাড়া আসামিদের মাঠের জমির ফসল তারা তুলে নেয়। জামিনে পেয়ে আমরা বাড়িতে আসলে ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে হুমিক দেয় তারা। মামলা তুলে না নেওয়ায় শনিবার সকালে আমার লোকজনদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে।’
সামাজিক মাতব্বর সাইফুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলো, ‘আমরা তাদের কোনো হুমকি দিই নাই। তারাই আমার ছেলেক হত্যা করে জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। আমি মামলা তুলতে রাজি না হওয়ায় শনিবার সকালে আমাদের ওপর হামলা করে। এতে আমার আব্বাসহ সাত-আটজন গুরুতর আহত হয়।’
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, ‘কাশিনাথপুর গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।’
"