মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)
মুরাদনগরের বাঙ্গরা পশ্চিম
সড়কের ইট তুলে সেতুর কাজ আ.লীগ নেতার ঠিকাদারি
কুমিল্লার মুরাদনগরে গ্রামীণ সড়কের ইট তুলে নিয়ে নিজের ঠিকাদারির কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ধনপতিখোলা এলাকার সড়ক থেকে ওই ইট তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি সেতুর নির্মাণকাজে ব্যবহার করছেন তিনি। এতে সড়কে ক্ষতি ছাড়াও পুরোনো ইট ব্যবহারের ফলে সেতু স্থায়িত্বও ঝুঁকির মুখে পড়বে মনে করছেন স্থানীয়রা। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আরসি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ শুরু হলেও কাজের শুরু করেছে রাস্তার নষ্ট পুরোনো ইট দিয়ে। এর আগেও আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনের ঠিকাদারিতে তৈরি একটি কালভার্ট উদ্বোধনের আগেই ভেঙে যায়। তারা চান, রুহুল আমিনকে বাদ দিয়ে কাজের মূল ঠিকাদারের মাধ্যমে কাজ করানো হোক।
উপজেলার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ধনপতিখোলা-কালারাইয়া এলাকার গ্রামীণ সড়কের ২৫০ ফুটের সলিংয়ের ইট তুলে নেওয়া হয়েছে। এই ইট পার্শ্ববর্তী আরসি নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি সেতুর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেতুটি ১০০ মিটার সড়কসহ চার কোটি টাকার টেন্ডার দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এই কাজের উপঠিকাদার বাঙ্গরা পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও একই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিন। সেতুর কাজে ভালমানের ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও সড়কের পুরাতন ইট তুলে নিয়ে ব্যবহারের ফলে এর স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু জাহের বলেন, ‘রুহুল চেয়ারম্যান আমাদের বাড়ির সামনে থাকা খাস জমির মাটিও বিক্রি করে দিয়েছে। মাটি কাটার কারণে এখন ওই জায়গা দিয়ে মানুষ চলাফেরা করতে পারে না। তিনি এ এলাকার অনেক ক্ষতি করেছেন। এখন রাস্তার ইট নিয়ে ব্রিজের কাজ করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একজন মনির হোসেন বলেন, ‘রুহুল আমিন চেয়ারম্যান আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে এলাকার মানুষের ওপর অত্যাচার-অবিচার করেছেন, এখনো তার ত্রাসের রাজত্ব কায়েম রাখতে চাচ্ছেন। সড়কের ইট তুলে নেওয়ার প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন তিনি। আমরা চাই আরসি নদীর সেতুটি যেন সঠিকভাবে হয়। টেন্ডার অনুযায়ী সব কিছু যেন নতুন সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে হবে।’
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা। আরসি নদীর সেতুটি ১০০ মিটার সড়কসহ টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। সড়কের যে অংশ থেকে ইট নেওয়া হয়েছে সেই অংশটা নতুন করে কার্পেটিং করব। কিছু মানুষ অনৈতিক সুবিধা না পেয়ে এসব অভিযোগ করছে।’ তবে সড়কের ইট সেতুর কাজের ব্যবহারের বিষয়ে তিনি উত্তর দেননি।
জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী রায়হানুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আরসি নদীর সেতুর অ্যাপ্রোচ ও সঙ্গে ১০০মিটার সড়ক কার্পেটিংয়ের কাজ আছে। এটা এই ঠিকাদারকেই করতে হবে।’
"