সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার
ফুলকপি উৎপাদন খরচ ১৫ টাকা, বিক্রি ৫
শীতকালীন আগাম ফুলকপি চাষ করে বিক্রি করে ভালোই লাভবান হয়েছিল মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার চাষিরা। কিন্তু গত কয়েকদিনে ফুলকপির দাম কমে যাওয়ায় চাষের খরচ ওঠাতেই পারছে না চাষিরা। উৎপাদন খরচ ১৫ টাকা হলেও বিক্রি এখন ৫ টাকায়। দাম কম থাকায় কপি কেটে খেতেই ফেলে রাখছে তারা। উপজেলা কৃষি অফিসের মতে, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে।
সরেজমিনে উপজেলার কিছু এলাকায় দেখা গেছে, কপি যে জমিতে চাষ করা হয়েছিল দাম কম থাকায় কপি খেত থেকে না তুলে জমিতে ফেলে রেখেছে চাষিরা। অনেক চাষি পরবর্তী ফসল রোপন করতে কপি কেটে কেটে নষ্ট করে জমিতে মিশিয়ে দিচ্ছে।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক জানায়, চলতি রবি মৌসুমে উপজেলায় ২৪৯ হেক্টর জমিতে ফুলকপি ও ৫৫ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপির আবাদ করেছিল চাষিরা।
শীতের শুরুতে প্রতি পিস কপি বিক্রি হয়েছে ৫০-৭০ টাকা পর্যন্ত। এখন ফুলকপির ভরা মৌসুম। উৎপাদনও বেড়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। ক্রেতারা ও সবজি ব্যবসায়ীরা চাহিদার অতিরিক্ত কপি কিনছে না। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় প্রতি পিস কপির দাম দিচ্ছেন ৫-৬ টাকা। অথচ প্রতি কপি উৎপাদন করে বাজার পর্যন্ত নিয়ে যেতে কৃষকের খরচ হয়েছে ১৫ টাকা।
উপজেলার চামারখাই এলাকার বাবু মাস্টার জানায়, ফুলকপির এক লাখ চারা রোপন করেছিলেন তিনি। ৪০ হাজার কপি বিক্রি করার পর দাম না পাওয়াতে খেতে ফেলে রেখেছেন তিনি। তার মতো তার গ্রামের সকল কপি কৃষকদের অবস্থা একই।
আইরমারার চাষি বশির আহমেদ বলেন, গত বছরগুলোয় কপি বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছে। এ বছর তিনি ১৮ বিঘা জমিতে আবাদ করেছে। এরই মধ্যে ১০ বিঘা জমির আগাম কপি বিক্রি করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা পেয়েছে। বাকি আট বিঘা জমির কপি খেতেই নষ্ট হচ্ছে। বিক্রি করতে না পারায়। এখন খেত পরিষ্কার করতে ওইসব কপি কেটে ফেলে রাখছে। কিছু গরুকে খাওয়াচ্ছে।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল¬াহ আল মামুন জানান, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমে গেছে কপির। আগাম বিক্রি করে লাভবান হলেও বর্তমানে লোকসান হয়েছে কপি চাষিরা। বিষয়টি কৃষি অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। যদি সেখান থেকে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের সহযোগীতা করা যায় তবে করবেন।
"