গাজী শাহাদত হোসেন ফিরোজী, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ
শীতে মুড়ির চাহিদা বৃদ্ধি ভাজায় ব্যস্ত কর্মীরা
অন্য বছরের চেয়ে এবার বেড়ে গেছে মুড়ির চাহিদা ও দাম। চাহিদা পূরণে সিরাজগঞ্জের সদর থানার কালিয়া গ্রামের মুড়ি ভাজার কর্মীরা ব্যস্ত পার করছে। এমন পরিস্থিতি যে তাদের এখন দম ফেলার সময় নেই। শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ অবস্থা চলবে বলে জানান তারা।
জানা গেছে, এখানকার মুড়িতে ক্ষতিকারক কোনো কিছু ব্যবহার করা হয়না বলে জেলাজুড়ে জেলার কালিয়া গ্রামের মুড়ির চাহিদা রয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা মুড়ি ভেজে নিয়ে যায়। গ্রাম বাঙলার মানুষের মুখোরচক খাবার মুড়ি। যা রোজা, পূজা পার্বন সহ সাড়া বছরই খেতে ভালোবাসে আবাল বৃদ্ধ বণিতা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মুড়ি ভাজার কাজ চলছে। প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহকরা এসে মুড়ি ভেজে নিয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত ছাড়াও অনেক ব্যবসায়ীরা গিয়ে তাদের কাছে মুড়ি ভেজে নেয়। প্রতি কেজি চালের মুড়ি ভাজতে মুজুরি নেওয়া হয় ২৫-৩০ টাকা। যারা বেশি পরিমান মুড়ি ভাজেন তারা দুই একদিন আগে থেকে জানান।
স্থানীয় পল্লবী সাহা জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ১ থেকে ২ মন চালের মুড়ি ভাজা হয়। সারা বছরই কম বেশি ব্যস্ততা থাকলেও এবার শীতে আগমনে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এই সময় রাত দিন কাজ করেন। মানুষ এসেই তারা হুরা করে মুড়ি ভেজে দেয়ার জন্য। ঘুম থেকে উঠার আগেই বাড়ির গেটে এসে বসে থাকে।
অপর কারিগর মিনতি সাহা জানান, মুড়ি ভেজে আমাদের পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। প্রায় ১২-১৩ বছর ধরে এই ব্যবসা করছেন। এই মুড়ি ভাজা থেকে যে টাকা পাই তা দিয়ে আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার খরচ সহ সাংসারিক খরচ করে থাকি। তিনি আরো জানান, এক সময় আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল ছিলনা। পরে এই কাজ শুরু করার পর আমাদের সংসারের অভাব দুর হয়েছে। পুরুষের পাশপাশি আমরা মেয়েরাও আয় করছেন। বাড়িঘর পাকা করে আর্থিক যে সংকট ছিল তা দুর হয়েছে।
মুড়ি ভাজতে আসা সানজিদা বেগম জানান, তিনি সকালে ১৫ কেজি চাল নিয়ে এসেছি মুড়ি ভাজতে। শীতের সময় নিজেদের পাশপাশি মেয়ের শ্বশুরবাড়িসহ আত্মীয় স্বজনদেরকে দিতে হবে। প্রতি কেজি চালে মুড়ি ভাজতে মুজুরি হিসাবে ২৫-৩০ টাকা দিতে হয়। এখানকার মুড়ি ভাজা ভালো হয়।
সিরাজগঞ্জ শহরের মাছিমপুর মহল্লার শাহিন জানান, বাজারে যে মুড়ি পাওয়া যায় তাতে নানা কেমিক্যাল মিশানো হয় যা স্বাস্থ্যঝুকি বাড়িয়ে দেয়। এখানে এরা সামনেই স্বাস্থ্য সম্মতভাবে মুড়ি ভেজে দেয়। প্রতি কেজি মুড়ি বর্তমানে ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জের সহকারি পরিচালক মো. সোহেল সেখ বলেন, আমাদের বাজার মনিটরিং (তদারকি) অব্যহত রয়েছে। তদারকি আরো জোরদার করা হবে। কোথাও ভেজাল ও কেমিক্যাল যুক্ত খাবার তৈরি করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
"