অলিউজ্জামান রুবেল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

  ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

বরেন্দ্র অঞ্চল

চাঁপাইয়ে ভূগর্ভস্থ পানির সংকট হুমকিতে ধান চাষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূগর্ভস্থ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির সংকট দীর্ঘ হচ্ছে। আগামীতে খাদ্য উৎপাদনে অনিশ্চয়তার শঙ্কা করছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ। বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় প্রতিবছর পানির স্তর দিন দিন নিচে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে ওইসব এলাকায় ইরি ধান চাষে নিরুৎসাহিত করছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ। ফলে বাধ্য হয়ে অন্য ফসল উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষক।

কৃষকরা জানান, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পানি দেওয়ার যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে এতে ধান চাষ সম্ভব নয়। এতে চালের সংকট দেখা দিতে পারে। আর বিএমডিএ বলছে আগামী দিনে পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতেই নেওয়া হয়েছে এমন উদ্যোগ।

জানা গেছে, বরেন্দ্র এলাকায় মাসখানেক ধরেই চলছে আমন ধান ঘরে তোলার কাজ। অনেক কৃষক আবার ধান ঘরে তুলে জমি প্রস্তুত করছিলেন ইরি ধান চাষ করার জন্য। কিন্তু হঠাৎ করেই হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। তারা ইরি ধান চাষ না করতে ডিপের অপারেটর ও সংশ্লিষ্ট কৃষকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করছে। এমনকি নির্দেশ অমান্য করে ধান চাষ করলে বেঁধে দেওয়া সময়ের বেশি বিদ্যুৎ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কৃষকরা বলছেন, বিএমডিএর নির্দেশ মেনে মৌসুমি ফসল গম, মসুর ডাল ও ভুট্টা চাষে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।

সদর উপজেলার ঝিলিম এলাকার কৃষক মনোয়ার মড়ল বলেন, ধান ছাড়া লাভজনক তেমন অন্য কোনো ফসল উৎপাদন হয় না বরেন্দ্র অঞ্চলে। এ কারণেই বছরে তিনবার ধান চাষ করেন তারা। এতেই সংসার চলে তাদের। কিন্তু পানির ‘সংকট’ বলে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ ধান চাষ করতে নিষেধ করেছে। ফলে বাধ্য হয়েই অন্য মৌসুমি ফসল উৎপাদনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন।

আরেক কৃষক মোন্তাজ আলী বলেন, মৌসুমি ফসল উৎপাদনে খরচ বেশি। তারপরেও কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন হয় না। এতে লোকশান হয় তাদের।

কৃষক মো. আলম বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে সোলার সিস্টেম পাতকুয়া নির্মাণ করলেও এর কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা। অথচ চাহিদা অনুযায়ী ডিপ-টিউবওয়েল বসানো হলে পানির সংকট হত না।

বিএমডিএর ডিপ-টিউবওয়েল অপারেটর সাইদুর রহমান বলেন, ধান চাষ কমানোর বার্তা দিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের মৌসুমি ফসলে সেচ দিতে। তার দাবি কৃষক মৌসুমি ফসল উৎপাদন করলে শিগগিরই দেখা দেবে ধান-চালের সংকট। তিনি পানির সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে তাগিদ দেন।

জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী মো. মুসাইদ মাসরুর জানান, দিন দিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। সে পানি ধরে রাখতে এবং আগামীতে সেচ নিশ্চিত করতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানোর জন্য নেওয়া হয়েছে এমন উদ্যোগ। তার দাবি মৌসুমি ফসল বিভিন্ন জাতের ডাল, শাকসবজি, আলু উৎপাদন হচ্ছে অল্প সেচে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close