মাহফুজুর রহমান, মুরাদনগর (কুমিল্লা)
কুমিল্লার মুরাদনগর
শ্রেণিকক্ষ না থাকায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদান
কুমিল্লার মুরাদনরের পুস্করিনীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট চলছে। এতে খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। পড়ালেখায় বিদ্যালয়টি সুনাম অর্জনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়লেও হচ্ছে না কাঠামোগত উন্নয়ন। এছাড়া শিক্ষক সঙ্কটসহ বিদ্যালয়ে নৈশ্যপ্রহরী না থাকায় শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে মনে করছেন শিক্ষক, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।
উপজেলার চাপিতলা ইউনিয়নের অবস্থিত পুস্করিনীরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৩৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার চল্লিশ বছর পরে ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও সরকার ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ভবনটির একটি রুমে অফিস কক্ষ, অপরটিতে শিশু শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তবে ভবনটিও বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থা।
এদিকে অবকাঠামো সংকটে বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম গুরুতরভাবে ব্যবহত হলে ২০২২ সালে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে স্থানীয়রা। এরপরও শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট থাকায় খোলা আকাশের নিচে পাঠদানে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। রোদের মধ্যেই ২৫০ শিক্ষার্থীর ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। অপর দিকে দীর্ঘদিন থেকে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে কার্যক্রম। এছাড়া ৭টি পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন। রক্ষণাবেক্ষেণের জন্য নেই নৈশ্যপ্রহরীও।
চতুর্থ শ্রেণির সুমা ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তারেকসহ ততোধিক শিক্ষাথী বলে, শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বাধ্য হয়ে তারা প্রখর রোদে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে, বর্ষাকালে বৃষ্টির কারণে অনেক দিন তারা ক্লাস করতে পারে না।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মো. সেলিম সরকার জানান, ‘আমি সভাপতি থাকা অবস্থায় একটি পুরাতন ভবন ছিল। ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় ২০২২ সালে ওই ভবনটি নিলামের মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হয়। এতে শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। পরে আমি স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি টিনের ঘর নির্মাণ করি। এতেও শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট শেষ না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিতে বাধ্য হই।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তামান্না আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এরপরও কোনো প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে।’
জানতে চাইলে মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘পুষ্করিণীরপাড় প্রাথমিক বিদ্যালয় নতুন ভবনের ব্যাপারে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। আশাকরি শিগগিরই বরাদ্ধ পাওয়া যাবে। তাতে দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে। প্রধান শিক্ষক পদোন্নতির মাধ্যমে ও সহকারি শিক্ষকের শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণ করা হবে।’
"