লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

লালমনিরহাট

পরিবহন শ্রমিকদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ১২

লালমনিরহাটে বাস মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুজন সাংবাদিক, এক পুলিশ সদস্যসহ দুপক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

গতকাল রবিবার দুপুর ১২টার দিকে জেলার কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে শ্রমিক নেতা ওমর ফারুক বাবলুর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সংঘর্ষের সময় প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না ও সাংবাদিক এসআর শরিফুল ইসলাম রতন আহত হয়েছেন।

পরিবহন শ্রমিকরা জানান, অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি সমর্থিত জেলা বাস মিনিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্ব নিয়ে দুটি পক্ষ তৈরি হয়। একটি পক্ষ সংগঠনের পুরনো রেজিস্ট্রেশন নাম্বার বহাল রাখা এবং বহিরাগত শ্রমিক ও দ্বৈত শ্রমিক দিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিস্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়াকে প্রচলিত শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি ওমর ফারুক বাবলু।

এদিকে মাহফুজার ও বকুল ড্রাইভারসহ অন্যরা পুরোনো নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিস্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া চালু রেখেছে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ক্ষোভ ও সংঘাতের সৃষ্টি হয়।

শ্রমিক নেতা বাবলু জানান, ৫ আগস্টে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকেই মাহফুজার, বকুলসহ বেশ কিছু শ্রমিক আওয়ামী লীগের দোসরদের সঙ্গে নিয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘন করে দ্বৈত ও বহিরাগত শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের নতুন রেজিস্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া চালায়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে রবিবার নিবন্ধিত শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী একটি মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

শ্রমিক নেতা বাবলু বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলটি কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল এলাকায় মানববন্ধনের জন্য পৌঁছায়। সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে থাকা মাহফুজার, বজুল ড্রাইভার গংরা আমাদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়ে। এতে আমাদের কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’

তবে মিছিলে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে অপর পক্ষ মাহফুজার ও বকুল ড্রাইভারগংরা। তাদের দাবি, বাবলুর নেতৃত্ব দেওয়া মিছিল থেকেই বাস টার্মিনালে থাকা শ্রমিকদের ওপর ঢিল ছোড়া হয়। এতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে বাসযাত্রী ও পথচারিরা দিক-বিদিক ছুটাছুটি করে। বাসটার্মিনালে শ্রমিকরা নতুন করে শ্রমিক ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করছিল বলেও তারা জানান।

সংঘর্ষের সময় আহত সাংবাদিক এসআর শরিফুল ইসলাম রতন বলেন, ‘শ্রমিকদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনার ভিডিও ধারন করার সময় আমাকে ও প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি জিন্নাতুল ইসলাম জিন্নার ওপর হামলা চালায় একটি পক্ষ। সাংবাদিকের ওপর হামলা করার বিষয়টি নিয়ে ভিডিও দেখে আমরা সাংবাদিকরা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

জানতে চাইলে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শ্রমিকদের একটি দল প্রতিবাদ মিছিল ও একটি দল সমাবেশ করছিল। উভয় পক্ষই বাসটার্মিনাল এলাকায় মুখোমুখি হলে প্রথমে ইটপাটকেল ছুড়ার ঘটনা ও পরে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার হয়। এতে একজন পুলিশসদস্য, সাংবাদিকসহ কয়েকজন শ্রমিক আহত হন। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’ এ ছাড়া ওই এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close