বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

খাদ্যবান্ধব চাল বিক্রির লাভের টাকা ইউপি সচিবের পকেটে

নওগাঁর বদলগাছীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিপত্রের নির্দেশনা না মেনে বিভিন্ন খরচের নামে খাদ?্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির লাভের টাকা লুটের অভিযোগ ওঠেছে উপজেলা খাদ?্যবান্ধব কমিটিসহ জেলা খাদ?্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে। তবে ৭০ শতাংশ টাকা খরচ হবে। ৩০ শতাংশ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে বলে জানান ইউএনও। এদিকে চাল বিক্রির লাভের টাকা কোথায় যাবে তা জানা নেই বলে জানান ইউপির সচিবরা।

জানা গেছে, উপজেলা খাদ?্যবান্ধব কমিটির সহায়তায় উপজেলার আটটি ইউপি সচিবদের (ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে) ডিলার সাজিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রি এবং লাভের টাকা নিজেদের পকেটে রেখেছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ আগস্ট উপজেলার সব পুরাতন খাদ্যবান্ধব ডিলার বাতিল করে এবং ১২ নভেম্বর উপজেলার নতুন ডিলারের তালিকা প্রকাশ করে উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটি। আবারও ১৪ নভেম্বর অভিযোগ হলে ১৮ নভেম্বর নতুন ডিলার স্থগিত করে উপজেলা খাদ?্যবান্ধব কমিটি। এর কারণে উপজেলার সাত হাজার ৭৫৫ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগী দুই মাস ধরে চাল না পেয়ে পরে চরম বেকায়দায় পড়ে। উপকারভোগীদের কথা চিন্তা করে গত ১৯ নভেম্বর নিয়মনীতি মেনে নওগাঁ সদর ও বদলগাছী উপজেলার চাল বিতরণের ব?্যাপারে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর পরিপত্র জারি করে খাদ?্য মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা পেয়ে জেলা খাদ্য অফিসের নির্দেশনায় উপজেলা কমিটির সহায়তায় ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইউনিয়ন পরিষদের সচিবরা ১৩ টাকা কেজি ধরে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে চাল উত্তোলন করে চাল বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে গত ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার থেকে গত ২ ডিসেম্বর সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আটটি ইউনিয়ন পরিষদে দেখা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, সচিব, এবং গ্রাম পুলিশ মিলে মোট ৭ হজার ৭৫৫ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগী পরিবারের কাছে কেজি প্রতি ২ টাকা বেশি লাভে একসঙ্গে অক্টোবর-নভেম্বর দুই মাসের চাল বিক্রি করছেন। এতে লাভ হয় ৯ লাখ ৩০ হাজার ৬৩০ টকা। তবে চাল বিক্রির পুরো লাভের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না করে ইউপি সচিবরা নিজেদের পকেটে রেখেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

উপজেলার মেহরাব সাঈদ, নাহিদ আখতার, আঞ্জুমান আরাসহ একাধিক ইউপির সচিব জানান, আমাদের চাল বিতরণ করতে বলা হয়েছে আমরা করেছি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কত টাকা ট্রেজারির মাধ্যমে জমা দিয়েছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, ব্যাংকে কে টাকা জমা করেছে আমি বলতে পারব না। তবে ইউএনও স্যার এবং উপজেলা ফুড অফিসের নির্দেশনায় চাল বিতরণ করা হচ্ছে। চাল বিক্রির লাভের টাকা কোখায় যাবে তা জানা নেই। আমাদের নামে উপজেলা প্রশাসন টাকা জমা করেছে।

উপজেলা খাদ?্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সাবরিনা মোস্তারী বলেন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মহোদয়ের নির্দেশনায় ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী চাল বিক্রি করছেন সচিবরা। লাভের ৭০ শতাংশ টাকা রেখে বাকি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে।

উপজেলা খাদ?্যবান্ধব কমিটির সভাপতি ও ইউএনও মাহবুব হাসান বলেন, এ বিষয়ে জেলা এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকতার্রা বলতে পারবেন। আমার জানা মতে ৭০ শতাংশ টাকা খরচ হবে। ৩০ শতাংশ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে। 

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন মুঠোফোনে জানান, যারা চাল বিক্রি করছেন তারাই লাভের টাকা পাবেন। অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ লাভের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ রকম কোনো আদেশ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close