শচীন্দ্র নাথ মন্ডল, দাকোপ (খুলনা)
খুলনার দাকোপ
ভোগান্তির অপর নাম বাজুয়া খেয়াঘাট
খুলনার দাকোপ উপজেলার বাজুয়া-দিগরাজ আন্তঃজেলা খেয়া ঘাটের অবস্থা বেহাল হয়ে আছে। ঘাট সংস্কার বা পন্টুন না থাকায় প্রতিনিয়ত নদীতে ভাটার সময় যাত্রীদের কাদা-পানিতে নেমে এমনকি বাঁশের সাঁকো ভাঙা ঘাট দিয়ে ট্রলারে উঠতে হয়। সঠিক সেবার কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও যাত্রীদের নিয়মিত ইজারার টাকা পরিশোধ করে ট্রলারে যাতায়াত করতে হয়। এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাসহ ওই পথের যাত্রীদের।
সরেজমিন দেখা গেছে, ওই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে থাকে। খুলনা-মোংলাসহ দেশের সব জায়গায় যেতে হলে এই এলাকার মানুষকে এই ঘাট দিয়ে ট্রলারে করে পার হতে হয়। আর আসা-যাওয়ার সময় যাত্রীদের নানা সমস্যায় পড়তে হয় পন্টুন না থাকায়।
যোগাযোগের তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এখানে যাতায়াতের শেষ ভরসা ট্রলারে করে নদী পার হতে হয়। কিন্তু প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিক, স্কুল-কলেজের পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক, শিশু, বৃদ্ধ নারী পুরুষ সবাইকে কষ্ট করে উঠতে হয় এই ঘাট দিয়ে। জানা গেছে, এই খেয়া ঘাটটি চলতি বছর মোংলা উপজেলা প্রশাসন থেকে রাজস্ব দিয়ে ইজারা গ্রহণ করেন খেয়াঘাটের মাঝিরা।
ঘাট সমিতির সভাপতি হাবি সরদার বলেন, এত টাকা রাজস্ব দিয়ে ঘাট কিনে এখন বিপদে আছি। দিগরাজের পারে ঘাট এলাকায় ভাঙন লাগায় কিছুতেই ভাঙন রোধ করতে পারছি না। এছাড়া বাজুয়া পারেও পাকা ঘাটের শেষে বাঁশের সাঁকোর ঘাট থাকায় জোয়ারে নদীর স্রোত ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ঘাট ভেঙে দিচ্ছে। ঘাট ভেঙে যাওয়ায় কাদা-পানিতে যাত্রীরা উঠতে চায় না। তারপরও মালামাল ওঠানামার ক্ষেত্রে রয়েছে আরো সমস্যা।
ওই এলাকার কাঁকড়া ব্যবসায়ী বাবু বলেন, শুধু বাজুয়া, লাউডোব, কৈলাশগঞ্জ, বানিশান্তা, দাকোপ ইউনিয়নের লোকজন এ ঘাট দিয়ে চলাচল করে তা নয়, পাশের অনেক জেলার ও ইউনিয়নের লোকজনও যাতায়াত করে থাকে। মালামাল নিয়ে এছাড়া অনেক সময় অসুস্থ রোগী ট্রলারে উঠতে ঘাট দিয়ে খুবই কষ্ট হয়।
ট্রলার থেকে উঠার সময় অসুস্থ হালিমা নামক এক মহিলা বলেন, ‘বাবারে এ ঘাট দিয়ে কীভাবে আমরা রোগী ট্রলারে উঠি এবং ট্রলার থেকে নামি বলতে পারেন? এমন ভাঙা ঘাট দিয়ে ওঠানামা করা যায় না। আমার স্বামীর ঘাড়ে ভার দিয়ে ট্রলার থেকে লাঠি ভর করে উঠছি।’
ঘাটের ট্রলার মাঝি কামরুল বলেন, ঘাট সংস্কার না করায় ভাঙা ঘাটের কারণে এই ঘাট দিয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়ছে। তাই ঘাটের জন্য পন্টুনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। জোয়ারের পানির চাপে বাঁশের সাঁকোর ঘাট ভেঙে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
কৈলাশগঞ্জ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নিতাই জোর্দার বলেন, এটা আন্তঃজেলা খেয়াঘাট এ ঘাট দিয়ে সরকার বছরে প্রায় ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকে। আর সেই ঘাটে পন্টুন না থাকায় বাঁশের সাঁকোর ঘাট দিয়ে ট্রলারে উঠতে হয় নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধদের।
"