দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

  ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪

নেত্রকোনার দুর্গাপুর

গোখাদ্য সংকটে পশু বিক্রি বৃদ্ধি মিলছে না কাঙ্ক্ষিত দাম

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার শিবগঞ্জ সাপ্তাহিক হাটে বেড়েছে পশুর কেনাবেচা। আকস্মিক বন্যায় ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি পঁচে গেছে গবাদি পশুর খাদ্য খড়। গোখাদ্য অভাব আর খরচ মেটাতে না পারায় অনেকে বিক্রি করে দিচ্ছেন গবাদি পশু। তবে হাটের হাসিল মওকুফ করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে।  

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক ও খামারেরা তাদের পশু নিয়ে আসেন শিবগঞ্জ হাটে। প্রতি হাটে বেচাকেনা হয় প্রায় অর্ধকোটি টাকার ওপরে বলে জানা গেছে। তবে কৃষকরা বলছেন, উপজেলায় কৃষকদের আয়ের অন্যতম পথ ফসল ও পশু লালন পালন। তবে অক্টোবরের আকস্মিক বন্যায় ফসল পঁচে নষ্ট হওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে গোখাদ্যের। সংকট নিরসনে এখন অনেকে বিক্রি করে দিচ্ছেন তাদের পালিত পশু। 

হাটি আসা কৃষক মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, লালন পালনের জন্য গত চার মাস আগে একটি ফ্রিজিয়াম জাতের দুধের গাভি কিনলেও বন্যার পর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি আর লালন-পালনের খরচ বাড়ায় গাভীটিকে বিক্রি করতে হাটে তুলেছেন তিনি। দরদাম শেষে এক লাখ ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে তার শখের গাভীটি।

আবুল কালামের মতো প্রায়ই সকল কৃষকেরই একই অবস্থা। আকস্মিক বন্যার পর গোখাদ্যের সংকটে তারা দিশেহারা। অতিরিক্ত খরচের বোঝা বইতে না পেরে অনেকেই পশু বিক্রি শুরু করেছেন। এতে হাটগুলোতে ভিড় রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার।

এদিকে সীমান্তবর্তী দুর্গাপুরের শিবগঞ্জ সাপ্তাহিক হাটে আশপাশের উপজেলা থেকেও পশু নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। এখানকার গরু পাইকারের হাত ধরে রাজধানীসহ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে হাটগুলোতে ছোট থেকে মাঝারি প্রায় সব প্রকার গরুর চাহিদা বেড়েছে। বিশেষ করে ৫০ হাজার থেকে লাখ টাকার মধ্যে পশুর চাহিদা বেশি। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কথা মাথায় রেখে হাটের ইজারা কর মওকুফ করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে বেচাকেনায়।

বিক্রেতারা জানান, তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের লোকজন সিন্ডিকেট করে হাট থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতেন। ছোট গরুর হাসিল এক হাজার টাকার ওপরে দিতে হয়েছে তাদের। তবে এখন সেই টাকায় পরিবহনে খরচ মেটাতে পারছেন তারা। আর আগস্টের অভ্যুত্থানের পর ইজারাদার পালিয়ে যাওয়ায় বাজার সুশৃংখল ও কৃষকদের কথা চিন্তা করে বিএনপির উদ্যোগে হাটের ইজারা কর মওকুফ করা হয়েছে বলে জানান হাট পরিচালনাকারীরা। 

স্থানীয় ইজারাদার আবুল কাশেম জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে শিবগঞ্জ পশুর হাট স্থানীয় পৌর থেকে প্রায় এক কোটি টাকার ওপরে ইজারা পাওয়া যায়। বেচাকেনা ভালো হলে এ হাতে আয় হয় প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ওপরে আর উৎসবগুলোতে বেচাকেনা দাঁড়ায় কোটি টাকার বেশি। 

শিবগঞ্জ হাট পশুর হাট পরিচালনাকারী খাঁন সুমন জানান, গত অক্টোবরে আকস্মিক বন্যায় এ অঞ্চলের কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকদের কথা মাথায় রেখে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামালের নির্দেশে হাটের ইজারা কর মওকুফ করা হয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে শিবগঞ্জ বাজার। হাটের দিন শৃঙ্খলা ধরে রাখতে প্রতি শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে কাজ করছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close