জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর
আমনের লক্ষ্য ছাড়িয়ে আবাদ কাঙ্ক্ষিত দামের আশা চাষিদের
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় চলতি রোপা-আমন ধান চাষাবাদের মৌসুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে, কৃষকরা তাদের ফসলের উপযুক্ত মূল্য পাবেন আশা আছে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় সাড়ে ৯ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। আমন ধান চাষাবাদে প্রদর্শনী সহ প্রায় এক হাজার ৩০০ কৃষককে সার বীজ সহ সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৫২০ টন। এবার রোপা-আমন মৌসুমে সরাসরি প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে এক হাজার ৩২০ টাকা দরে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ৫৪০ টন ধান ক্রয় করা হবে। এজন্য কৃষি তালিকা চূড়ান্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মিরপুর, পাটলী, কলকলি, সৈয়দপুর-শাহারপাড়া, হলদিপুর-চিলাউড়া, রানীগঞ্জ, পাইলগাঁও ও আশারকান্দি ইউনিয়নের কৃষকদের খেতে ৮০ ভাগ ধান পাকা এবং ২০ ভাগ খেতের ধান পাকতে শুরু করেছে। ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ও সনাতন পদ্ধতিতে ধান কাটতে দেখা গেছে। মাড়াই ঝাড়াই আর ধান শুকনোর কাজে কৃষাণ কৃষাণীদের দিন শেষ হচ্ছে। এদিকে কাটা ধান বাড়িতে আনতে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করতে দেখা গেছে। শুধু ধানই নয় গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ধানের খড়কুটো সংগ্রহ করে রাখছেন কৃষকেরা।
পাইলগাঁও ইউনিয়নের ধান ব্যবসায়ী মাতাব আলী বলেন, মোটা ধান ৮৫০ ও চিকন ধান ১০৫০ টাকা দরে কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করছি। ধানের দাম ওঠা নামা করে, সকালে একদর বিকেলে আরেক দর।
মিরপুর ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের কৃষক আশরাফ মিয়া বলেন, ৪০ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি, ফলন ভালো হয়েছে।
কলকলি ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের কৃষক জহিরুল হক বলেন, ২০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, গত বছরের তুলনায় এবার কিছুটা ফলন ভালো ভালো হয়েছে। পাটলী ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের আরেক কৃষক মুসা মিয়া বলেন, চাষাবাদ করতে খরচ বেশি লাগে, ফলন ভালো হয়েছে তবে উপযুক্ত মূল্য পাওয়ার দাবি জানাই। এছাড়া উপজেলার রানীগঞ্জ, পাইলগাঁও, আশারকান্দি ও হলদিপুর-চিলাউড়া ইউনিয়নের একাধিক কৃষক তাদের খেতে ভালো ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দাস, আমীর আফজাল, আব্দুল কাদির, কবির আহমদ, উজ্জ্বল দেব নাথ, নাজিম উদ্দীন, বিভেকানন্দ, বুলবুল জাহান কমল, রেজাউল করিম, অঞ্জন রায়, সুজন সরকার ও ফজলুল হক জানান, রোপা-আমন ধান চাষাবাদের পর থেকে মাঠ পর্যায় গিয়ে কৃষকদের চাষের খেত দেখাশোনা করা হচ্ছে। এবং চাষাবাদে সঠিক পদ্ধতি রোগবালাই দমনে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, এবার উপজেলায় আবহাওয়া অনুকূলে ছিল এবং বৃষ্টিপাত হয়েছে পোকামাকড়ের আক্রমণ ছিল না। এজন্য আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ ভাগের বেশি পাকা ধান কাটা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ধান কাটা শেষ হবে। উপজেলায় নয় হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে রোপা-আমন ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ হাজার ৫২০ টন। ফলন ভালো হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে, কৃষকরা তাদের ফসলের উপযুক্ত মূল্য পাবেন আশা আছে।
"