আশরাফুল আলম সাজু, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম)
কুড়িগ্রামের রাজারহাট
তিস্তার চরে আগাম আলুতে ভালো লাভের আশা
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় আগাম আলু আবাদ করে লাভের আশা করছেন অনেক তরুন যুবকরা। উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত দুইটি ইউনিয়ন বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গায় অবস্থিত চর সমুহ এখন কর্মমুখর। শত শত শ্রমিকের কোলাহলে মুখরিত চর সমুহ।
জানা গেছে, সুদিনের আশায় চর সমুহে ফিরে এসেছেন নদী এলাকা তথা চরাঞ্চলের মানুষজন। যেদিকে চোখ যায় চকচকে বালুর বুকে সবুজের সমারহ। তবে সবার নজর কারবে আগাম আলুর খেত সমুহ। আলুর কচি গাছের ডগায় দোল খাচ্ছে শত তরুন ও যুবকের স্বপ্ন। আলু তোলার পরে একই জমিতে মিষ্টি কুমড়া, পিয়াজ, বাদাম মরিচ সহ হরেক রকম ফসল ফলাবার প্রস্তুতি চলছে একই সঙ্গে। অধিকাংশ আলুর বয়স ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে হবে এই সময়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন কৃষকেরা। এবারে সার, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বেশির অভিযোগ থাকলেও সেই চিন্তায় মাথায় নিয়ে নষ্ট করার মত সময় কারো নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাত ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষক শ্রমিকেরা দলে দলে ডিঙ্গী নৌকায় করে নদী পার হয়ে আসছেন খেতে। কেউ আবার খেতের পাশে অস্থায়ী ঝুপরি ঘর তৈরি করে প্রয়োজনীয় মালামাল সহ অবস্থান করছেন ওইখানে।
উপজেলায় তিস্তা নদীতে জেগে ওঠা চর গতিয়াশাম, চর খিতাব খাঁ,সহ কয়েকটি চর ঘুরে দেখা গেছে, আগাম আলুর খেত পরিচর্যা যেমন, নিরানি, স্প্রে, সেচ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন বয়সের কৃষক ও কিষানী। মালিক শ্রমিকের হাক ডাক শুনে মনে হবে কোনো উৎসব চলছে তিস্তার চর সমুহে। শ্রমিকদের শারীরিক ভাষায় বলে দিচ্ছে তাদের প্রাপ্তির কথা।
খিতাব খাঁ চরে কথা হয় কৃষানী সুফিয়া বেগম (৪৫) বলেন, ‘এক একর জমি বন্ধক নিয়া আলুর আবাদ করছি। জিনিস পত্রের যে দাম তার পরেও আল্লায় দিলে লাভ করমো’। আব্দুর রহিম, কছিমুদ্দিন, জাহেরুল, মমিন সহ আরো অনেকে সবাই জানান, আগাম আলুর আবাদ করে লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন তারা।
উপজেলার রাজারহাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমীন (৪৬) জানান, তিনি গত কয়েক বছর ধরে আলু আবাদ করে লাভবান হয়েছেন। চলতি মৌসুমে এক বন্ধু সহ তিস্তার বিভিন্ন চরে প্রায় প্রায় ১৯ একর জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। সব মিলে তাদের খরচ হবে প্রায় ৩৮ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা। ফলন ভালো হলে মোটা অংকের লাভের আশায় রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছেন দুই বন্ধু।
উপজেলার বিদ্যানন্দ চরে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের জানান, এই মৌসুমে তিস্তার চরাঞ্চলে প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বিশেষ করে আগাম আলু চাষিদের কাছাকাছি থেকে নানা পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে।
"