নাটোরের বড়াইগ্রামে নির্যাতনের শিকার আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগকর্মী উজ্জ্বল কুমার মন্ডলের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল রবিবার দুপুরে তিনি স্বল্পসংখ্যক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে আকস্মিক উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর শ্মশানপাড়া এলাকায় উজ্জ্বল কুমারের বাড়িতে যান। এ সময় তিনি উজ্জ্বলের মা ছায়া রানীর সঙ্গে কথা বলেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উজ্জ্বলের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং উজ্জ্বলের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রিজভী। আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য পুলিশ প্রশাসনসহ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন তিনি।

উজ্জ্বলের মা ছায়া রানী বলেন, হঠাৎ বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়িসহ ৫টি গাড়ি এসে দাঁড়ায়। পরে জানতে পারলাম বিএনপি’র বড় নেতা এসেছেন। তিনি আমার ছেলে উজ্জ্বলের খোঁজ-খবর নেন। আমাদের সকলের খোঁজ-খবরও নেন। উজ্জ্বলের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় এজাহার করার কথা বলেন। এছাড়া আমাদের পরিবারের ওপর হামলা হলে বা কেউ হুমকি দিলে নেতাদের তাৎক্ষনিক জানাতে বলেন।

উজ্জ্বলের বাবা বিশু মন্ডল জানান, আমরা অনেক খুশি। আমরা অনেক ভয়ে ছিলাম। ৭ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা বউমাকে (উজ্জ্বলের স্ত্রী) তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। বিএনপির ওই বড় নেতাসহ এলাকার আরো বিএনপি নেতা আমাদের বাড়িতে আসার পর এখন শান্তি পাচ্ছি। ভয় দূর হয়েছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান, বড়াইগ্রাম উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আলীম প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর পালিয়ে থাকা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বাড়িতে এসেছে এ খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর শ্মশানপাড়ার বাড়িতে আসে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা জালাল ভুঁইয়া, যুবদলের নেতা জাহাঙ্গীর আলম সহ ৭/৮ জন বিএনপি নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগের শাসনামলে চাঁদাবাজি ও মাস্তানি করার অভিযোগ তুলে তারা বৃদ্ধ মা-বাবা ও অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীর সামনে উজ্জ্বলকে বেধড়ক মারপিট করে এবং পরে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়ে যায়। বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশনে সংবাদ প্রচার হয়। এ সংবাদ বিএনপির উচ্চ পর্যায়ে দৃষ্টিগোচর হলে কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নেতা রুহুল কবির রিজভী নির্যাতিত উজ্জ্বলের বাড়িতে আসেন এবং খোঁজ-খবর নেন।

বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, উজ্জ্বলের বাড়িতে আসার আগে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব থানায় আসেন এবং উপজেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।

"