আরিফ মাহমুদ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)
সাতক্ষীরার কলারোয়া
অনাবাদি জলাবদ্ধ জমিতে পানিফলে সাফল্য
পানিফল দেখতে শিঙাড়ার মতো বলে স্থানীয়দের কাছে ফলটি পানি শিঙাড়া নামেও পরিচিত। খেতেও সুস্বাদু। সেই পানি ফল বা পানি শিঙাড়া চাষে সাফল্য পেয়েছেন সাতক্ষীরার কলারোয়ার বহু কৃষক। মূলত পতিত জলাবদ্ধ জমিতে এর চাষাবাদে ব্যাপক ফলন পরিলক্ষিত হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। ফলে সাফল্য পেয়ে এই মৌসুমি পানি ফল চাষে অনেকে যেমন ঝুঁকছেন তেমনি পতিত ও জলাবদ্ধ জমিও কাজে লাগানো যাচ্ছে।
যশোর-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুধারে পৌরসদরের গোপিনাথপুর ও যুগিবাড়ির কয়েকশত বিঘা জমি বছরের বেশিরভাগ সময় থাকতো জলাবদ্ধ। ফসল তেমন হতোই না। বাধ্য হয়ে কেউ কেউ বেড়িবাঁধ দিয়ে মাছ চাষের ঘের তৈরি করেছে। তবে অনেকে সেটাও পারেনি। ফলে বেশির ভাগ জমি থাকতো অনাবাদি। সেই অনাবাদি ও জলাবদ্ধ জমিতে পানি ফল বা পানি শিঙাড়া চাষাবাদে সাফল্য পাচ্ছেন প্রান্তিক কৃষকেরা। এখন সেই জলাবদ্ধ পতিত জমিতে শোভা পাচ্ছে পানি ফলের গাছ। প্রতিদিন ভোরে নারী-পুরুষ হাঁটুপানিতে বা কোমরপানিতে নেমে ফল তুলছেন। দিনভর সেখানে যশোর-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কের ধারে বসে পানি ফল বা পানি শিঙাড়া বিক্রি করতে দেখা যায়। আর ক্ষুদ্র মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ভ্যান, ইজিবাইক বা অন্য যানবাহানে বস্তায় ভরে এই পানি ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান অন্যত্র। এছাড়া এই পানি ফল বা পানি শিঙাড়া চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
পলাশ, সঞ্জু, সিয়াম, রাসেলসহ অনেকে জানান, উপজেলার পতিত জমিতে পানি ফলের চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। পানি ফল চাষি ওসমান, তৌহিদ, আবুল, কাদের, কবিরসহ কয়েকজন জানান, সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে ঋণ সহায়তা পেলে আরো অনেক প্রান্তিক কৃষক পানি ফল চাষের সুযোগ পেতে পারেন। ফলে জলাবদ্ধ ও পতিত জমি আর অনাবাদি থাকবে না, মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা ও গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাস জানান, উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৩৮ হেক্টর পতিত জমিতে পানিফল চাষ হয়েছে।
"