কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ
সার-কীটনাশকহীন ১১ জাতের বিদেশি ধান চাষে সাফল্য
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ১১ জাতের বিদেশি ধান চাষাবাদে ফলন ভালো পেয়েছেন কৃষক মোহন রবিদাস। দেশে প্রচলিত যে কোনো হাইব্রিড জাতের ধানের তুলনায় ব্ল্যাক রাইস, পার্পেল রাইস, সুগন্ধি বাসমতি, সুগন্ধি কস্তুরি, রড (পাকিস্তানি), তুলসী মালা, বাংলাদেশের ব্রি-ধান-১০৩ সহ ১১ জাতের ধানের চাষ করে ভালো ফলন হবে বলে জানান কৃষক মোহন রবিদাস।
উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের গল্ফ মাঠের পাশে পতিত ৩০০ শতক জায়গায় এই ১১ জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন মোহন রবিদাস। মোহন রবিদাস একজন চা শ্রমিক সন্তান।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, ‘বিভিন্ন ধরনের ১১ জাতের ধান রোপন করেছেন মোহন রবিদাস। এসব ফলনে কৃষকরা ভালো লাভবান হবেন। এই জাতের ধানের আবাদগুলো ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে ধানের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই ধান অবদান রাখবে।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, এর আগে ব্ল্যাক রাইস,পার্পেল রাইস, সুগন্ধি বাসমতি, সুগন্ধি কস্তুরি, রড (পাকিস্তানি), তুলসীমালা, বাংলাদেশের ব্রি-ধান-১০৩ সহ ১১ জাতের চাষ করেনি কেউ। নতুন এই ধান নিয়ে এসেছেন কৃষক মোহন। ধান কাটার পর কৃষকের কাছ থেকে বীজগুলো সংগ্রহ করা হবে। সার-কীটনাশকহীন ১১ জাতের ধান চাষাবাদে করে যেমন মোহন লাভবান হয়েছেন। তারাও এই আশায় আছেন।
উপজেলার শমসেরনগর গ্রামের কৃষক অমলিক রবিদাস বলেন, ‘নতুন জাতের ব্রি-ধান-১০৩ হাইব্রিড। আবার লম্বা ও চিকন। নতুন এ জাতের ধান ফলনও বেশি দিয়েছে। বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাই আগামী বছর এ জাতের ধান আবাদ করব।’
কৃষক মোহন রবিদাস জানান, তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশ ও দেশের বাহিরে ভারত থেকে সব মিলিয়ে ১৩ জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। বীজগুলো হলো, ব্ল্যাক রাইস,পার্পেল রাইস, সুগন্ধি বাসমতি, সুগন্ধি কস্তুরি, রড (পাকিস্তানি), তুলসীমালা, বাংলাদেশের ব্রি-ধান-১০৩ সহ বিভিন্ন জাতের বীজ। এসব চাষের ফলাফল আশানুরূপ ফলন ভালো হয়েছে। সার-কীটনাশক একদম একদম দেওয়া হয়নি। এলাকায় যে উচু জমি এই ধানগুলো এসব জমিতে চাষ করার উপযোগী। এই ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। তিনি আরও জানান, কৃষকদের সুবিধার জন্য তিনি বাড়ির পাশে একটা দোকান দিয়ে বীজগুলো সংগ্রহ করে বিক্রি করবেন। কৃষকরা যেন সেই বীজগুলো সংগ্রহ করে আবাদ যেন করতে পারেন। এই জাতের ধান দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। সেইসঙ্গে এ জাতের ধান আবাদ করে অধিক লাভের আশা করছেন কৃষক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়েন্ত কুমার রায় জানান, মোহন রবিদাস নিজেকে একজন আদর্শ কৃষক পাশাপাশি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। এই উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানে প্রতিকুল পরিবেশে এই ধান চাষ করায় তাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি প্রায় ১১ জাতের ধানের সম্মেলন ঘটিয়েছেন। অনেকে হয়তো এমন চাষ কখনো দেখেনি। এখানে অনেক গবেষনার সুযোগ রয়েছে। এখান থেকে ধান গবেষনার বিজ্ঞানী রয়েছে এই জাতের ধানগুলো সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে দেশে ভবিষ্যতে পুষ্টি জাত তৈরি করা যায়। এসব ধান চাষ করায় কৃষকরা খুবই উৎসাহীত সহ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই ধান অবদান রাখবে।
"