শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি
পড়া ধান কাটতে লাগছে দ্বিগুণ কৃষক, লোকসানের শঙ্কা
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ায় মাগুরার শালিখা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে পড়ে গেছে আমনের পাকা ধানের গাছ। আর এই পড়ে যাওয়া ধানগাছ কাটতে একজনের জায়গায় লাগছে দুইজন কৃষাণ। সাথে কিছু কিছু জায়গায় পোকার উপদ্রব দেখা দিয়েছে। ফলে আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে দ্বিগুণ খরচ গোনার পাশাপাশি আমনচাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। প্রথমত তলিয়ে যাওয়া দ্বিতীয়ত ভারী বর্ষণে ধানগাছ পড়ে যাওয়ায় ধান নিয়ে লোকসানের শঙ্কায় দিন পার করছেন তারা। এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। ভালো ফলন ও ভালো দাম পেলে লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হতো বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ কৃষক।
সরেজমিন উপজেলার আড়পাড়া, শতখালী, তালখড়িসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, মাঠভরা আমন ধান। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে পড়ে গেছে ধানের গাছ। মিশে আছে মাটির সাথে। এক হিসেবে দেখা গেছে, পাকা ধানের মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি জমির ধান গাছ মাটিতে পড়ে আছে। পড়ে যাওয়া এই ধানগাছ কাটতে বেগ পাওয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ খরচ গুনতে হচ্ছে আমন চাষিদের। মাঝে কিছু জায়গায় কিছু ধান গাছ শক্ত থাকলেও অধিকাংশ জমির ধানগাছ মিশে আছে মাটির সাথে। আর এই ধান কাটতে মাঠেই ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়ায় ধানগাছ পড়ে যাওয়ায় ভালো ফলনের আশায় গুড়ে বালি।
আড়পাড়া ইউনিয়নের পুকুরিয়া গ্রামের আউশ চাষী নজরুল মোল্যা বলেন, এ বছর ৪ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগাইছি যার অধিকাংশ মাটিতে পড়ে গেছে যা কাটতে দ্বিগুণ শ্রমিক লাগছে।
তালখড়ি ইউনিয়নের ছান্দড়া গ্রামের কৃষক ফিরোজ হোসেন বলেন, ১২ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি যার বেশির ভাগ জমির ধান গাছ পড়ে গেছে এবং কিছু জমির ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১৪ হাজার ৫৮১ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ৫৬৩ হেক্টর জমি। এছাড়া মোট চাষ করা জমির ৪৫ শতাংশ ধান পেকে গেছে যার মধ্যে ২৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হলেও ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ধানগাছ পড়ে যাওয়ায় ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন আমনচাষিরা।
শালিখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর হোসেন বলেন, স্বাভাবিকের চেয়ে গত অক্টোবর মাসে ২৯ মিমি বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় ১৫ শতাংশ জমির পড়ে যাওয়া ধানগাছ চার-পাঁচটি ধানের গোছা একসাথে বেঁধে খাড়া করে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাকা ধান দ্রুত কাটাসহ পোকার উপদ্রব প্রতিরোধ ও প্রতিকার করতে আমাদের দপ্তর থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
"