দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর দুমকি
তালিকায় অন্য পেশার মানুষ সুবিধাবঞ্চিত জেলেরা
পটুয়াখালীর দুমকিতে দুই হাজারেরও অধিক নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই ভিন্ন পেশার মানুষ বলে অভিযোগ স্থানীয় জেলেদের। তারা বলেন, যারা প্রকৃত জেলে তাদের অনেককে বাদ দিয়ে কয়েক শ ভুয়া জেলেকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে জেলেদের তালিকায়। তাই নিবন্ধিত না থাকায় সরকারি বিভিন্ন সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত জেলেরা। এ ছাড়া জেলেদের বরাদ্দের খাদ্য সহায়তা (চাল) বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতে যাচাই-বাছাই করে চাল দেওয়ার দাবি তাদের।
উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, দুমকিতে কার্ডধারী জেলে রয়েছে ২ হাজার ৪ জন। যার মধ্যে সুবিধাভোগী জেলে রয়েছেন ১ হাজার ২৫৬ জন। প্রতিবছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে উপজেলা মৎস্য অফিস জেলেদের তালিকা হালনাগাদ করে। এ সংশ্লিষ্ট উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি রয়েছে। চলমান ২২ দিনের মৎস্য শিকারের নিষেধাজ্ঞার খোঁজখবর নিতে গিয়ে উপজেলার শ্রীরামপুর, পাঙ্গাসিয়ার আলগি, হাজির হাট, আঙ্গারিয়ার বাহেরচর, দক্ষিণ মুরাদিয়ার জেলে পল্লীতে গেলে স্থানীয় জেলেরা এ অভিযোগ করেন।
তারা বলেন, উপজেলায় ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক ও সচ্ছল ব্যক্তিরা কার্ডধারী জেলে। জীবনে কখনো মাছ শিকার করেনি। যায়নি কখনো নদীর পাড়ে। তাদের প্রধান পেশা ব্যবসা-বাণিজ্য বা কৃষি। কিন্তু তারা নিবন্ধিত জেলে। খাদ্য সহায়তা তালিকায় সবার আগে তাদের নাম। প্রতিবছর জেলে হিসেবে তারা পান খাদ্য সহায়তা। চাল বিতরণের দিন লাইনে দাঁড়াতে হয় না তাদের। অন্য লোকের মাধ্যমে চাল চলে যায় তাদের বাড়িতে।
একাধিক জেলে বলেন, এ বছর এমনিতেই অনেক লোকশানে আছি ৬৫ দিনের অবরোধ অনেক কষ্ট হয়েছে পরিবারকে নিয়ে। ইলিশ রক্ষায় আমরা প্রতিবছর সরকারের কথা মেনে ঘাটে বসে থাকি। কিন্তু আমাদের নামে চাল আমরা প্রকৃত জেলেরা পাই না, অন্য পেশার মানুষ চাল নিয়ে যায় আমাদের সামনে থেকে। তাই জেলেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মাছ ধরে জাল্লারা, চাল পায় হাইল্লারা।’
তালিকায় থাকা ভুয়া জেলেদের কার্ড পরিবর্তন না করা হলে সরকারি অর্থ অপচয়ের পাশাপাশি সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। পাঙ্গাসিয়ার আলগি এলাকার জেলে পিন্টু বৈদ্য জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি জেলে পেশায় রয়েছেন। তিনি পায়রা নদীতে মাছ ধরেন কিন্তু তার নামে কোনো জেলা কার্ড নেই।
উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের জেলে মজিবর হাওলাদার বলেন, আমি অনেক বছর জেলে পেশায় আছি, আমার কার্ড হয় নাই। আর সরকারি কোনো সহায়তা পাই না। এছাড়া আমাদের এলাকায় আরো অনেক প্রকৃত জেলে রয়েছেন। তাদের কারো জেলে কার্ড নেই।
"