বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
বোয়ালখালী
এক পা হারানো জামাল এখন সফল কৃষক
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কড়লডেঙ্গা গ্রামের জামাল উদ্দীন দুর্ঘটনায় এক পা হারানোর পরও ভিক্ষা না করে স্ক্যাচের ভর দিয়ে করেন কৃষি কাজ। কৃষিতে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেন তিনি। প্রতি বছর তার গড়ে আয় এক থেকে দুই লাখ টাকা।
জানা যায়, ২০১৯ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় জামালের বাম পায়ের হাটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়। এরপর স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে পড়েন বিপাকে। চিন্তা করেন কি করবেন। কষ্ট হলেও নেমে পড়েন কৃষি কাজে, নিজের ৬০ শতক জমিতে শুরু করেন কৃষি কাজ। পরে আস্তে আস্তে অন্যের কাছ থেকে খাজনা নিয়ে জমির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে এখন তিনি প্রায় এগারো একর জমিতে চাষ করেন বিভিন্ন ধরনের সবজি। জামাল এখন সারা বছর লেবু, আলু, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, বেগুন, টমেটো, ধানসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষ করেন।
বর্তমানে তার সঙ্গে কৃষিতে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সন্তান জাহেদসহ ১০ থেকে ১২ জন কাজ করেন। এখন তিনি বছরে প্রায় এক থেকে দুই লাখ টাকা আয় করেন।
জাহেদ উদ্দীন বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবাকে সহযোগিতা করি। যখন থেকে বাবা পা হারান তখন থেকে তার পাশের দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।
কৃষক জামাল বলেন, পঙ্গু হওয়ার পর স্ত্রী, তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে সংসার কীভাবে চালাবো, কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তবে ভরসা ছিল আল্লাহর ওপর। শুরুতে অল্প জমিতে চাষাবাদ শুরু করি। এরপর সরকারিভাবে ভর্তুকির মাধ্যমে বিএডিসির সেচ প্রকল্পের স্কিম পাই। তা দিয়ে কাজ শুরু করে খাজনা নিয়ে জমির পরিমাণ বাড়াতে থাকি। এখন আমি বছরে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার শাক-সবজি বিক্রি করি। এতে আমার প্রায় দুই থেকে তিন লাখ টাকা আয় হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আগাম বেগুন চাষ করে লাভবান হয়েছি।
এছাড়া জামাল সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে এলাকার কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে বলেও জানান।
উপজেলা কৃষি বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, জামাল একজন পঙ্গু হয়েও কৃষিতে যেভাবে অবদান রেখে যাচ্ছেন তার গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি পঙ্গু মানুষ ভিক্ষা না করে কষ্ট হলেও কৃষি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এখন একজন সফল কৃষক এবং বোয়ালখালী কৃষি বিভাগ তাকে সর্বদা সহযোগিতা করেছে। এবার তিনি আগাম বেগুনসহ সবজি চাষ করেও লাভবান হয়েছেন।
"