বেড়া-সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি
সোঁতি জালে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত, ক্ষতির শঙ্কায় আবাদ
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) প্রধান নিষ্কাশন খালের অন্তত চারটি জায়গায় বাঁশের ঘের তৈরি করে সোঁতি জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। এতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় উপজেলার অন্তত ১৫টি বিলের প্রায় ১০ হাজার বিঘা আমনের খেত জলমগ্ন হয়ে আছে। বীজতলা তৈরিসহ রবি মৌসুমে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে মুলকাটা পেঁয়াজ, পেঁয়াজের দানা, রসুন, শরিষার আবাদ ব্যাহত হওয়ায় আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। সাঁথিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অথচ স্থানীয় প্রভাবশালীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পানি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পরিচালনা করে আসছে অবৈধ সোঁতি জাল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, কাগেশ্বরী নদীকে ১৯৯২ সালে প্রধান নিষ্কাশন খালে (ডি-২) রূপান্তরিত করা হয়। এই নদীর সঙ্গে সংযোগ রয়েছে উপজেলার অন্তত ১৫টি বিলের। বর্ষা মৌসুমে এসব বিলসহ উপজেলার নিচু এলাকার পানি ওই খালের মাধ্যমে কাগেশ্বরী নদী দিয়ে যমুনা নদীতে চলে যায়। এসব খালে আমন ধান কেটে পেঁয়াজসহ রবিশস্যের আবাদ করা হয়।
প্রান্তিক কৃষকেরা জানান, প্রতিবছর অক্টোবরের মাঝামাঝি জমি থেকে পানি নেমে যায়। কিন্তু এ বছর উপজেলার নন্দনপুর, গৌরীগ্রাম, করমজা, কাশীনাথপুর ও খেতুপাড়া ইউনিয়নের ২৫টির বেশি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার বিঘা আমন খেতে এখনো এক থেকে পাঁচ ফুট পানি জমে আছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, সোতি জালের ঘের নির্মাণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রভাবশালী। ফলে ভয়ে তাঁরা ঘেরমালিকদের কিছু বলতে পারছেন না। প্রশাসনের উদ্যোগে ঘেরগুলো উচ্ছেদ করার দাবি জানান তাঁরা।
তালপট্টি গ্রামের কৃষক সালাম সরদার বলেন, সোতির কারণে ক্ষেত থেকে পানিই নামছে না কবে মুড়িকাটা পেঁয়াজ লাগাবো আর কবে দানা চারবো? আবাদের সময়ইতো পার হয়া যাচ্ছে। সোতি ওলাগেরে তো কিছু বলাই যায় না মারতে আসে। আগে ছিল এক গ্রুপ এহন আবার তৈরি হইছে অন্য গ্রুপ।
আরো জানা গেছে, বড়গ্রাম এলাকায় সোতি জালের ঘের নির্মাণ করেছেন বড়গ্রাম এলাকার বকুল খা, তবে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে রেজাউল খা, আনিস খা। এ বিষয়ে রেজাউল খা বলেন, ‘এখানে আরও লোকজন সোঁতি জাল দিয়ে মাছ মারতিছে। তারা সোঁতি ওঠা নিলে আমরাও ওঠা নেবোনে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন, সোঁতি জালের ঘেরগুলো উচ্ছেদের জন্য ইতিমধ্যে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। দ্রুতই ওইসব উচ্ছেদের অভিযান পরিচালনা করবো।
"