মঞ্জুরুল হক, জামালপুর

  ২০ অক্টোবর, ২০২৪

অল্প বৃষ্টিতে হাঁটুপানি বিপাকে ৬০০ পরিবার

জামালপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার হাটচন্দ্রা, পলাশতলা, বগলাবাড়ি ও কাজিরআখসহ ৪টি এলাকায় একটু বৃষ্টিতেই দেখা দেয় হাঁটুপানি। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন ৬ শতাধিক পরিবারের প্রায় ৩ হাজার মানুষ। স্কুলে যেতে পারছে না ওই এলাকার শিশু শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, সারা এলাকা জলাবদ্ধতার কারণে মৃত ব্যক্তির জানাজার নামাজ পড়তে হয় মিয়াবাড়ি মাদ্রাসা মাঠে। সমস্যা নিরসনে সম্প্রতি এলাকাবাসী জামালপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়সহ পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে পৃথক স্মারক লিপি দিয়েছেন।

এলাকাবাসী জানায়, পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব হাটচন্দ্রা, পলাশতলা, বগলাবাড়ি ও কাজিরআখ ৪টি এলাকায় প্রায় ৬ শতাধিক পরিবারের প্রায় ৩ হাজার মানুষ বসবাস করছে। দিনের পর দিন বর্ষা এলেই জমে থাকা হাটু পানিতে বসবাস করতে হচ্ছে এদের। এলাকায় বসতভিটা,রাস্তা-ঘাট জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত পানির নীচে তলিয়ে থাকে।পৌর বাসি পানিতে বসবাস করাসহ চলা ফেরায় নাকা চুবানি খেতে হয় তাদের

এ জনপদের কঁচিকাঁচা স্কুলগামী শিশু বয়বৃদ্ধ,গর্ভবতি নারী ও মুমুর্ষ রোগিদের চিকিৎসায় যাতাযাত করতে চরম বিড়ম্বনায় স্বীকার হতে হয়।এছাড়া জলাবদ্ধ পানিতে ভেসে আসা ময়লা,আর্বজনা দুর্গন্ধ পরিবেশ মানব শরীরের জন্য কতটা যে ক্ষতিকর, তা আধুনিক যুগে অজানা কারোর নয়।কিন্তু পরিতাপের বিষয়,এ নিয়ে যেন পৌর কর্তৃপক্ষের ভাবার নেই।

শুক্রবার সকালে ওই এলাকায় সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাযায়,বিগত সরকারের মদদপুষ্ট ব্যক্তিরা পানির গতিপথ রোদ্ধ করে হাঁস মুরগি,গরুর খামার এমনকি মৎস চাষ করতে গিয়ে পানির গতিপথ বন্ধ করে দিয়েছে।ফলে সরকারী রাস্তায় ব্রিজ কালভাট থাকলেও তাথ অকেজু হয়ে পড়ে রয়েছে। কিন্তু এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকার কারণে জলাব্ধতা দেখা দিয়েছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে জমে থাকা পানি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসির দাবী,এই মুহুর্তে পাকা ড্রেন করা সম্ভব না হলেও কাঁচা ড্রেন করে অথবা পানি প্রতিবন্ধকতা খোলসা করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে পৌরসভার পূর্ব হাটচন্দ্রার হারেজ আলী বলেন,বৃষ্টির ৬মাস জলাবদ্ধতায় এলাকার কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজা নামাজ পড়ার কোন জায়গা নেই। তাই মৃতদেহ অন্যত্র (মিয়া বাড়ি মসজিদ মাদ্রাসা মাঠে) নিয়ে জানাজা পড়তে হয়। পলাশতলা সাবেক মহিলা কাউন্সিলর মোছাঃ জয়বানু বলেন,বর্ষাকাল এলেই বৃষ্টির পানিতে সয়লাভ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন,পতিত সরকারের সমর্থিত প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি গরুর খামার, মুরগির খামার ও মৎস প্রকপ্লের নামে পানি নিষ্কাশনের গতিপথ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে প্রায় ৬ মাস এলাকার বাড়ি-ঘরসহ হাজার একর কৃষিজমি পানির নীচে তলিয়ে থাকে। অপরদিকে অন্য কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিটি ঘরে ঘরে পানি থাকায় আমাদের এলাকার শিশু শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না। এছাড়া জলাবদ্ধতার সময় কেউ মৃত্যুবরণ করলে জানাজা নামাজ পড়ার কোন শুকনো জায়গা নেই। তাই মৃতদেহ অন্যত্র নিয়ে জানাজার নামাজ পড়তে হয়। বয়বৃদ্ধ গর্ভবতীনারীসহ অসুস্থ্য রোগীদের চিকিৎসায় যাতায়াত করতে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে আমাদের। তারা আরো বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে হাস, মুরগি, গরুবাছুর পালন করাসহ প্রায় হাজার একর ফসলি কৃষি জমিতে কৃষিকার্য্য চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে এলাকাবাসি’র। এ ব্যাপারে বিগত দিনে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বহু বার আবেদন নিবেদন আকুতি মিনতি করে সুফল পাননি তারা। পৌর কর্তৃপক্ষ শুধু আশ্বস্থ্য করে থাকেন। কিন্তু জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারিদের বিরুদ্ধে কোন প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করে পানি নিষ্কাশনের বিকল্প কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা গ্রহন করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে এলাকাবাসি পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।

এ ব্যাপারে জামালপুর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই এলাকার জলাবদ্ধতা নিয়ে একটি স্মারকলিপি পেয়েছি, সরেজমিন দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close