দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আব্দুল গণি মাদরাসা
সুপারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিচার দাবি
* টাকা ফেরত চাইতে গেলে ভুয়া নিবন্ধন সনদের মামলার ভয় দেখান সুপার * ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস ইউএনও শেখ জাহিদের
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে মাদারেরচর আব্দুল গণি ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপারের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার জামালপুর জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম এবং দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন চাকরিচ্যুত সহকারী মৌলভী মো. নাদের হোসেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাদরাসার সুপার হাসমত আলী ভুক্তভোগী নাদের হোসেনকে ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে এনটিআরসিএর শিক্ষক নিবন্ধন সনদ এনে দেন। তা দিয়ে নাদের হোসেনকে সহকারী মৌলভী পদে পদায়ন এবং এমপিওভুক্তিকরণের সময় তার কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা উৎকোচ নেয় সুপার হাসমত আলী। যেহেতু মাদরাসা সুপার জানতেন সহকারী মৌলভী নাদের হোসেনের শিক্ষক নিবন্ধন সনদটি ভুয়া। এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নিবন্ধন সনদ ভুয়া প্রমাণিত করে চাকুরিচ্যুত করেন সহকারী মৌলভী নাদের হোসেনের। নাদের হোসেন তার দেওয়া টাকা ফেরত চাইতে গেলে ভুয়া নিবন্ধন সনদের মামলার ভয় দেখান সুপার। আজও সেই টাকা ফেরত পাননি নাদের হোসেন। এরপর সুপার কোন পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা ছাড়ায় মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে ওই পদের বিপরীতে মোছাঃ শারমিন আক্তার নামের একজনকে নিয়োগ প্রদান করান।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, একজন সহকারী মৌলভী, দুজন জুনিয়র মৌলভী, একজন অফিস সহকারী ও একজন ল্যাব সহকারী পদের জন্য কোনোরকম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা ছাড়াই তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে তাদের নিয়োগ প্রদান করেন সুপার হাসমত আলী। কৃষি শিক্ষাসহ বেশ কয়েকটি পদে পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ভুয়া হওয়ায় উক্ত পদে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নানা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বলে জানা যায়। বিগত ৮ বছর ধরে শিক্ষকদের টিউশন ফি না দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সুপারের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতিতে সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেনের সম্পৃক্ততা আছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে। আলমগীর হোসেনের যোগসাজসে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা সুপারের নিজের নামের শতাধিক মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে পকেট ভারী করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, বিগত আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের দোহাই দিয়ে সুপার এমন অনিয়ম ও দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি মাদরাসায় নিয়মিত আসতেন না মাসে একদিন এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে যেতেন। মাদরাসাটিকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ছিলেন সুপার হাসমত। শুধু দলীয় কার্যালয় নয় তিনি এটাকে টাকার মেশিনে পরিণত করেছিলেন বিভিন্ন রকম নিয়োগ বাণিজ্য করে। মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা তার এসব অন্যায়- অপকর্মের বিরুধে কোনো কথা বলার সাহস পেতেন না। আওয়ামী লীগের দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে তাদের সবসময় কোণঠাসা করে রাখতেন তিনি। অভিযোগ আমলে নিয়ে সুপারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত করলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে বলে আশাবাদী ভুক্তভোগী নাদের হোসেন।
দেওয়ানগঞ্জ ইউএনও শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
"