পাবনা প্রতিনিধি
প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই সড়কে ধস
পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভাধীন প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই বোয়াইলমারী-আমোষ সড়কের কয়েক জায়গায় এজিংসহ প্যালাসাইডিং অংশ ধসে গেছে। ফলে ব্যস্ততম সড়কটিতে যানচলাচল ব্যহত হচ্ছে। সড়কটিতে প্রশস্তকরণ ও মেরামত কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর ব্যবহার, দুর্বল প্যালাসাইডিং ও মাটির ব্যবহার ঠিকমত না হওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। শিগগির এটি সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, সাঁথিয়া পৌরসভাধীন বোয়ালমারী স্থানীয় মহাসড়ক থেকে আমোষ তিন মাথা পর্যন্ত তিন কোটি ৩৬ লাখ ৮ হাজার ৮৮ টাকা ব্যয়ে আইইউজিআইপি প্রকল্পের আওয়াতায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৩ দশমিক ৭ মিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও মেরামতকাজের দায়িত্ব পান ডিসিএল অ্যান্ড ওসিএল জয়েন্ট ভেনচার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ। কাজটি শুরু হয় নভেম্বর মাসে এবং শেষ হওয়ার কথা নভেম্বর ২০২৪। গত জুন মাসে তরিঘরি করে কার্পেটিং শেষ করলেও প্রকল্পটিতে সড়কবাতি, রোড সাইন/ট্রাফিক সাইনসহ অন্যান্য কাজ বাকী রেখেই সাবেক ডেপুটি স্পিকারকে দিয়ে এটি উদ্বোধন করা হয়। সম্প্রতি ওই সড়কে বেশ কয়েক জায়গায় পাল্যাসাইডিং দুর্বল ও ঠিকমত মাটির ব্যবহার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই ধসে গেছে। ফলে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচলে ব্যহত হচ্ছে। ভারী যানবাহন যেতে পারছে না। ঝুঁকি নিয়ে রিক্সা-ভ্যান চলছে। এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সরজমিনে দেখা গেছে, ওই সড়কের তিন জায়গা ধসে গেছে। বোয়াইলমারী সাবেক মেয়র মিরাজুল ইলাম প্রামাণিকের বাড়ির নিকটে, এলিনের বাড়ির নিকটে ও আমোষে মাটি দেওয়া দুর্বল হওয়ায় ও প্যালাসাইডিং নতুন ব্যবহার না করে পুরনো প্যালাসাইডিং ব্যবহার হয়েছিল। ফলে সামান্য বৃষ্টিপাতেই মাটি ধসে প্যালাসাইটিং ভেঙ্গে রাস্তা ধ্বসে গেছে। এ ছাড়া সড়কের বেশ কয়েক জায়গায় কার্পেটিং ওঠে গেছে। কিছু জায়গায় ফাটল ধরেছে। যে কোনো সময় পুরো রাস্তাটি ধসে যেতে পারে বলে শঙ্কা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সড়কে প্রতিদিন চলাচলকারীরা বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় সরকার যেকোনো উন্নয়ন কাজের ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। তবে অনিয়ম দুর্নীতি আমাদের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়।
রাস্তার অনিয়ম কাজে হতাশ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগেই এভাবে ধসে যাবে, সড়ক ভেঙে যাবে এটা কেমন কথা? নিশ্চয়ই এ কাজে যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে।
স্থানীয় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মনসুর বলেন, ‘এতদিন আমরা অনেক কষ্ট করে যাত্রীদের নিয়ে গাড়ি চালিয়েছি। আশা ছিল সড়কটির কাজ সম্পন্ন হলে হয়তো আমাদের গাড়ি নিয়ে চলাচলের কষ্টটা লাঘব হবে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী হারুন অর রশিদ এর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আইইউজিপি প্রকল্পের প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু এখনও কাজ শেষ হয়নি এমনকি শেষ বিল দেওয়া হয়নি। বিষয়টি জানার পরে আমরা তদন্ত করেছি। সেখানে মাটি এবং প্যালাসাইডিং দুর্বল হওয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তাটি ধ্বসে গেছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল হক বলেন, এখানে পুরাতন প্যালাসাইডিং ধরা ছিল তাই বর্তমান কাজে নতুন প্যালাসাইডিং ধরা হয়নি। পাশে পুকুর থাকায় পুরাতন প্যালাসাইডিং পড়ে গিয়েছে। ঠিকাদার বলা হয়েছে মেরামত করে দিতে।
"