তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনধি
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ
অবহেলায় সোনাখাড়া ইউপি ভবন, খসে পড়ছে পলেস্তারা
দীর্ঘ ১৬ বছর অব্যবহৃত থাকায় অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবন। নির্মাণের পর একদিনও ভবনটি ব্যবহার না করায়, দরজা জানালা ভেঙ্গে পড়েছে। ইউনিয়নবাসীর দাবি ভবনটি সংস্কার করে সরকারি কার্যক্রম সচল করা হোক। এটি মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে উপজলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে জানায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবনটির দরজা জানালা ভেঙ্গে পড়েছে। রঙ ওঠে গিয়ে পলেস্তরাও খসে পড়ছে। আর এ সুযোগে মাদকসেবী সহ অসামাজিক কার্যকলাপের নিরাপদ আড্ডাখানা হয়ে ওঠেছে এ পরিষদ ভবনটি। ভবনটি সংষ্কার করে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করার দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। আরো জানা গেছে, সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদ হওয়ার পর থেকে নিমগাছি বাজারের পশ্চিম পাশে কার্যক্রম চলে আসছিল। পরিষদের কাজ করার মতো তেমন স্থাপনা ছিল না। আধাপাকা ওয়াল টিন শেডের তিনটি ঘর ছিল। জনগণের সেবা পেতে খুবই সমস্যা হতো।
সংশিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে নিমগাছি কলেজের পশ্চিমে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়ণে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। কিন্তু নির্মাণের পর রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে ভবনটি অব্যবহৃত থেকে যায়। ঠিকাদার কাজ বুঝিয়ে দিয়ে যথারীতি বিলও তুলে নিয়ে যান। দীর্ঘদিন পর ২০০৪ সালে ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা বরাদ্ধ আসে। এ সময় জমি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। এক পর্যায় সে সময় সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপির আব্দুল মান্নান তালুকদার। সেই সময়ের বিএনপির সংসদ সদস্য নতুন স্থান নিমগাছি কলেজের পাশেই ভবনটির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন এবং নতুন ভবনের উদ্ধোধন করেন ২০০৬ সালের ১৪ অক্টোবর। এরপর থেকে ভবনটি আর ব্যবহার হয়নি। সে সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ছানা বিএনপির নবনির্মিত ভবনে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে রাজি ছিলেন না। তিনি তখন পরিষদের কাজকর্ম চালাতে থাকেন নিমগাছি বাজারস্থ পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে। এ কারণে তখন থেকে আজ পর্যন্ত নির্মিত ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এ সুযোগে সেখানে চলছে অসামাজিক কার্যক্রম। স্থানীয় বাসিন্দারা গরু, ছাগল বেঁধে গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভবনটি ব্যবহার না হওয়ায় দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায়, নেশাখোরদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। রাত হলেই এখানে মাদকসেবীদের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। এরই মধ্যে ভবনটির দরজা, জানালা নষ্ট হয়ে গেছে। পলেস্তরা খসে পড়ছে।
এ বিষয়ে হোসেন ছানা জানান, ভবনটি আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে নির্মাণ হয়েছে। নিয়ম অনুসারে পুরাতন স্থানে ভবন নির্মাণের কথা থাকলেও, তখন বিএনপির শাসনামল থাকায় বিএনপি নেতারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্যত্র ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ করেন। সেই ক্ষোভে আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ওখানে না বসে পুরাতন অফিসে কাজকর্ম চালিয়েছিলাম।
রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, ভবন নির্মাণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। দ্রুত বরাদ্ধ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বরাদ্ধ পেলেই ভবনের সংস্কার করা হবে।
"