শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শিবগঞ্জ
জরাজীর্ণ হাসপাতাল ভবন চত্বর গোচারণ ভূমি
হাসপাতালের চত্বরে লালন পালন করা হচ্ছে গরু-ছাগল। বেঁধে রাখা হয়েছে হাতি। চেম্বারে ডাক্তার নেই। সপ্তাহে দুইএকদিন নিজেদের ইচ্ছে মতো দুইজন দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি আসেন আবার চলে যান। জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে ৪টি ভবন। এই গো-চরনভূমি তৈরি হয়েছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা ইউনিয়নের ভাগকোলা উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।
জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে ৬৬ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় ভাগকোলা উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় তিনটি আবাসিক ও একটি প্রশাসনিক ভবন। প্রতিষ্ঠার পর সেখানে মেডিকেল কর্মকর্তারা চিকিৎসা সেবা দিতেন। ছিলো অপারেশন থিয়েটারও। কিন্তু বর্তমানে এই স্বাস্থ্য কন্দ্রের চারটি ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। একটি ভবনে স্বল্প পরিসরে দেওয়া হয় চিকিৎসা সেবা। নিয়মঅনুযায়ী চিকিৎসক পদায়ন থাকার কথা থাকলেও একজন ফার্মাসিস্ট ও উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা।
স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল আলম জানান, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালুর প্রথম দিকে আউটডোরের পাশাপাশি ইনডোর চিকিৎসা সেবাও চালু ছিল। বর্তমানে শুধু আউটডোর সেবা চালু থাকলেও সপ্তাহে শুধু বুধবার কেন্দ্রটিতে চিকিৎসাসেবা দিতে আসেন দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য-সংশ্লিষ্টরা। এই হাসপাতালটি আগের রূপে দেখতে চান স্থানীয় বাসিন্দারা। পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হলে এখানে হাজার হাজার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা পাবে।
স্থানীয় কৃষক লুৎফর রহমান জানান, এক সময় লোকজন চিকিৎসা নিতে ভীর জমাতো। বড় বড় ডাক্তার বসতো। এখন আর নেই। শুধু জ্বর-সর্দি আর মেয়েদের কিছু ওষুধ দেয়। তাও আবার সাত থেকে আট দিন পরপর।
নজরুল ইসলাম নামে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জানান, দীর্ঘ দিন পরিত্যক্ত থাকায় এলাকার লোকজন হাসপাতাল ভবনের জানালা, দরজা ও প্রাচীরের ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছে। ভবন গুলোর মাঝে গরু ছাগল পালন করছে। হাতি বেঁধে রাখা হয় আঙ্গিনায়। এটি দ্রুত সংস্কার করে পূর্বের ন্যায় চিকিৎসা ব্যবস্থা ফিরে আনার দাবি জানান তিনি।
শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, ভাগকোলা উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর মেডিকেল কর্মকর্তা চিকিৎসা সেবা দিতেন। কিন্তু পরবর্তীতে নেদারল্যান্ড ভিত্তিক একটি সংস্থা হাসপাতালটি পরিচালনা করে। এরপর মঞ্জুরি না থাকায় কোনো চিকিৎসককে হাসপাতালটিতে পদায়ন করা হয়নি।
বগুড়ার সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ শফিউল আজম জানান, বগুড়ার ৫০টি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে ২১টিতে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া আছে। আর ১২টি কেন্দ্র সচল আছে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায়। স্থাপনা গুলো সংস্কার ও পরিবর্তনে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক থাকলেও তারা উপজেলায় সংযুক্ত আছেন। জনবল সংকট কাটাতে চেষ্টা চলছে।
"