কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ
আগাম আলু চাষ, ৪০০ কোটি টাকা আয়ের আশা
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে এ বছর আগাম আলু চাষে ৪০০ কোটি টাকা আয়ের আশা করছে কৃষি বিভাগ। অনুকূল আবহাওয়ায় আগাম আলু চাষে ধুম পড়েছে। টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত শেষে প্রকৃতিতে এখন শীতের আমেজ। মৌসুমের শুরুতে নতুন আলুর চাহিদা থেকে চড়া বাজার মূল্য পেয়ে দিগুন লাভবান হওয়া যায় এমন প্রত্যাশা কৃষকদের।
জানা গেছে, উপজেলার একদম উঁচু সমতলভূমির বেলে দো আশঁ মাঠগুলোতে স্বল্পমেয়াদি ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলন যোগ্য ‘সেভেন’ জাতের আগাম আলুর বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক।
সরেজমিনে বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা গেছে, কয়েক দিন আগে স্বল্প মেয়াদি আগাম আমন ধান ঘরে তুলে একই জমিতে আগাম আলুর বীজ বুননের জন্য হালচাষ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ, হিমাগার থেকে নিজের সংরক্ষিত বীজ আলু সংগ্রহ ও রোপণে চলছে। আগাম আলু বুনন ও প্রস্ততে মাঠের পর মাঠগুলো জমজমাট হয়ে ওঠেছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, রণচন্ডি ইউনিয়ন পরিষদের কুটিপাড়া গ্রামের আলুচাষি আব্দুল হাই ৪ বিঘা, হজরত আলী ৮ বিঘা, সুজা মিয়া ৮ বিঘা, মোজাম্মেল ৫ বিঘা, ফরিদুল ৫ বিঘা জমিতে আগাম আলু বুননে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। তারা জানান, আগাম ধান কেটে আগাম আলু বুনেছেন। যার আলু আগে ওঠবে সে কৃষক তত বেশি লাভবান হবেন। যা আগে ভাগে আলু উত্তোলন করতে পারলে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বাজার ধরতে পারবেন। স্বল্প সময়ে আলু ছাড়া অন্যকোন ফসলে এত লাভবানও হওয়া যায়না। যা গত বছর ধান কাটার পর সেই জমির চাষাবাদকৃত আলু খেতে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে বিঘায় লাভ করেন ৪০-৫০ হাজার টাকার ওপরে।
কৃষকরা আরো জানান, এ অঞ্চলের ডাঙ্গা জমিগুলো একদম উচু এবং বালু মিশ্রিত। ভারি বৃষ্টিপাত হলেও তেমন চিন্তা থাকেনা। আর পাশেই বিশাল বাফলার বিল থাকায় সব জমির পানি অনায়াসে সেখানে নেমে যায়। তাই আগেভাগে দিগুন লাভের আশায় আগাম আলু বুনছি।
বাহাগিলী ইউপির উত্তর দুরাকুটি হাড়িবেচা পাড়া গ্রামে আলুচাষি আব্দুল আজিজ ঢেমসা জানান, গত বছর তিনি ৮০ বিঘা জমিতে আলু বুনেন। প্রতি বিঘায় ফলন পান ৩০ থেকে ৩৫ বস্তা করে। যা উত্তোলন করে ৫০-৬০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করে খরচ বাদে অর্ধকোটি টাকা আয় করেন। এবার ধান কাটার পর ওই পরিমান জমিতে আলু বুননের প্রস্ততি চলছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম জানান, চলতি বছর ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বছর আগাম আমন ধানে ভাল ফলন পেয়ে কৃষক আগাম আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় উঁচুজমিতে আলুচাষে কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। নিচু জমিতে আবহাওয়া দেখে লাগানোর কথা বলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মাঠ পর্য়ায়ে কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহলে এক লাখ ৬০ হাজার মেট্রিকটন আলু উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। গড় বাজার ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে ৪০০ কোটি টাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে। এ বছর ভালো মূল্য পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন আশা আছে।
"