রাজু আহাম্মেদ, কুড়িগ্রাম
নুরুল্লাহ ফাজিল সিনিয়র মাদরাসা
মাদরাসা সুপারের নিয়োগ বাতিলে কক্ষে তালা সড়ক অবরোধ
কুড়িগ্রাম : বর্তমান সুপার নুর আলম সিদ্দিকী জেলার রাজারহাট উপজেলার আরেকটি মাদরাসায় কর্মরত * মাদরাসা খেলাধুলা বন্ধ, নেই খেলার উপকরণ
কুড়িগ্রাম সদরের নুরুল্লাহ ফাজিল সিনিয়ার মাদ্রাসায় সুপার নিয়োগ প্রক্রিয়া অবৈধভাবে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তার নিয়োগ বাতিলসহ ৫ দফা দাবিতে মাদ্রাসা পক্ষে তালা দিয়ে সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভণ্ডসমাবেশ করে তারা। পরে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীরা রাস্তা থেকে সরে আসে। তাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
মাদ্রাসাটি উপজেলা কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত। মাদ্রাসার বর্তমান সুপার নুর আলম সিদ্দিকী জেলার রাজারহাট উপজেলার চান্দামারী ফাজিল মাদ্রাসায়ও কর্মরত।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বর্তমান সুপার নুর আলম অন্য একটি মাদ্রাসায় এখনো কর্মরত আছেন। এই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের তার কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। জেলা প্রশাসক তাকে ১০ দিনের ছুটি দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ তদন্ত সাপেক্ষে যোগদান করতে বলেছেন, কিন্তুতিনি ছুটি পরবর্তী যোগাদান করেননি। তাই তার নিয়োগ বাতিলসহ দাবি আদায়ের রাস্তা অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে।
মাদ্রাসা সুত্রে জানা যায়, বর্তমান সুপার তিনি পূর্বের মাদ্রাসায় অব্যাহতিপত্র না দিয়ে বর্তমান মাদ্রাসায় যোগদান করেছেন। মাদ্রাসা অধিদপ্তরের অনুমোদন না হওয়ার পরেও আগের মাদ্রাসার ইনডেক্স বর্তমান মাদ্রাসায় ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি জানতে পেরে সহসুপার মেহের আলী একটি জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বেশ কয়েকবছর ধরেই মাদ্রাসায় কোনো নিয়মণ্ডশৃঙ্খলা নেই। মাদ্রাসায় পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা নেই। মেয়েদের নামাজ ঘরের অবস্থা ভালো না। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার উপকরণ নেই। এমনকি মাদ্রাসায় ঠিকভাবে পড়ালেখাও হয় না।
মাদ্রাসার ফাজিল প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, ‘আমাদের আতিক হুজুর ফোনে বলেছেন, মাদ্রাসায় ঝামেলা হচ্ছে তোমরা আয়। সহকারী সুপার মেহের মওলানা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। আমরা জানতে পারি, আমাদের বর্তমান সুপারের নিয়োগ অবৈধভাবে হয়েছে। আমরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করি।’
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাসেল বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস হয় না। খেলা বন্ধ, খেলার উপকরণ নেই। আমরা খেলার উপকরণ চাইতে গেলে আমাদের বলে টাকা নেই।’
অভিযোগ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসা সুপার নুর আলম সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে গতকাল একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কুড়িগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক মোছা. নুসরাত সুলতানার মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
"