মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুর
টানা বৃষ্টিতে মরল দেড় হাজার মরিচগাছ
মেহেরপুরের এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমির মরিচ অতিবর্ষণে নষ্ট হয়ে মারা গেছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। তবে চাষিরা বলছেন মাঠের পর মাঠ অধিকাংশ জমির মরিচ গাছ মারা গেছে। সেই হিসেবে ৩ হাজার হেক্টর জমির মরিচ গাছ মারা গেছে।
জানা গেছে, এবার জেলায় মরিচের আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে। যা গতবারের তুলনায় ৫০০ হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে। মরিচ চাষিদের কাছে লাভজনক হলেও, এবার মোটা অঙ্কের টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে মরিচাষিদের। যে সময় মরিচ ধরা শুরু করবে ওইসময় বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়াতে নরম মাটিতে মাঠের পর মাঠ মরিচ গাছ মরে গেছে। ফলে বাজারে মরিচ সংকটে দাম বেড়েছে মরিচের। যা নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
সরেজমিনে মেহেরপুর সদর, মজিবনগর ও গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাঠে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠে জমির মরিচ গাছ মরে খাড়া হয়ে আছে। কৃষিবিভাগের তথ্যে বৃষ্টির পানি জমে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির মরিচ গাছ মরে গেছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মরিচ চাষিরা। কিন্তু বেশিরভাগ এলাকার প্রতিটি জমিতেই পানি জমে মরিচ গাছ মরে গেছে। যেসব জমিতে এখনও মরিচগাছ মরেনি সেসব জমির মরিচ গাছ বৃষ্টির পর গরমের কারণে পচা রোগ লেগে শুকিয়ে যাচ্ছে। বাজারে মরিচের দাম ভালো পেলেও ফলন না পাওয়ায় হতাশ চাষি।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত বছর ভালো লাভবান হওয়ায় এবার চাষিরা বেশি পরিমাণে মরিচের আবাদ করেন। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও গরমের কারণে কপাল পুড়েছে মরিচ চাষিদের। মরিচের চারা রোপণের সময় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছ ভালো হয়েছিল। কিন্তু জমি থেকে মরিচ তুলে বাজারজাত করার এই মুহূর্তে বিরূপ আবহাওয়া মরিচ চাষিদের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছে।
সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের মরিচ চাষি হুরমত আলী বলেন, দুইবিঘা জমিতে মরিচচাষ করেছি। মাত্র একবার ৫০ কেজি মরিচ সংগ্রহ করেছি। এরই মধ্যে অতিবৃষ্টিতে পুরো জমির মরিচ গাছ মরে গেছে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, শুধু মরিচইনা টানাবৃষ্টিতে সদরে ৩০০ হেক্টর জমির ধান, ২৫০ হেক্টর জমির সবজি, মাসকলায়, পান ও কলা মিলে আরও ৩০০ হেক্টর জমির ফসল অতিবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, হঠাৎ করে নিম্নচাপের বৃষ্টিতে প্রায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমির মরিচগাছ মরে গেছে। প্রকৃতির বিরুদ্ধে কিছুই করার নেই। যেসব খেতে মরিচ গাছ বেঁচে আছে সেসব গাছে কিটনাশক স্প্রে করার জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
"