দুর্গাপুর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহী
বৃষ্টিতে সবজিখেতে পানি জমে পচন ১৫০ কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কা
রাজশাহীতে তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে শীতকালীন আগাম সবজি চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এ কারণে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ফসল প্রায় দেড়শ কোটি টাকার ওপরে লোকশান গুনতে হবে সবজি চাষিদের। এমনই তথ্য জানিয়েছে কৃষিসম্প্রসারন অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর উপপরিচালক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, খরিপ-২ মৌসুমে এবার রাজশাহী জেলায় ৫ হাজার ৫২৬ হেক্টর জমিতে আগাম শীতকালীন আগাম সবজির চাষ হয়েছে। বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবনে কৃষক কৃষি কাজ চালিয়ে গেলেও সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহের টানা বৃষ্টির কারণে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। সবজি খেতের গাছের গোড়ায় বৃষ্টির পানি জমে থেকে ফসলের গাছ পঁচে ও মরে যাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শীতকালীন সবজির বীজতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বেকায়দায় পড়েছেন সবজিচাষিরা। বিশেষ করে জেলার মধ্যে পবা, মোহনপুর, দুর্গাপুর, পুঠিয়া উপজেলায় বেশি পরিমানে সবজি চাষ হয়। উপজেলা গুলোর নীচু ও সমতল ফসলী জমিতে জমে আছে হাঁটু পানি। ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, সিম, কাঁচা মরিচ, বেগুন, কলা, পটল, করলা, ঢেড়শসহ ও শীতের আগাম সবজির খেতে পানি জমে যাওয়ায় প্রায় নষ্ট হতে বসেছে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ফসল। এতে প্রায় শতকোটি টাকার ওপরে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
পবা উপজেলার বড়গাছী এলাকার সবজি চাষি রানা জানায়, চারা রোপনের ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যেই ফুল কাটা হয়। খরচ বাদে প্রতিবিঘায় দুই থেকে আড়াই লাখ এবং হেক্টর প্রতি প্রায় ১৫ লাখ টাকার সবজি বিক্রি হয়। রাজশাহীতে শীতকালীন আগাম সবজি গুলো আর ১৫ দিনের মধ্যে বাজারজাত করা যেতো। কিছু জমির সবজি বাজারজাত শুরু হয়ে গেছে, ঠিক ওইময়ে টানা বৃষ্টিতে সবজি পঁচে ও নষ্ট হতে পারে বলে আশংকা চাষিদের। উপজেলায় প্রায় দেড়শ কোটি টাকা লোকশানে পড়ার সম্ভাবনা আছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তা মকলেছুর রহমান জানান, তিনদিনের টানাবৃষ্টিতে সবজি চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। বিরামহীন বৃষ্টি চলতে থাকলে সবজি, ধান ও অন্যান্য চাষাবাদে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই মুহূর্তে জমি থেকে যত দ্রুত সম্ভব পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা জরুরি।
এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষিসম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা বলেন, এ বছর রাজশাহী জেলাজুড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম সবজির আবাদ হয়েছে। প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ফসল প্রায় দেড়শ কোটি টাকার ওপরে লোকশানের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে নীচু ও সমতল কিছু জমির সবজির খেতে পানি বেঁধে থাকায় এই ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। তবে আর যদি বৃষ্টি না হয় এবং জমিতে বেঁধে থাকা পানি নিস্কাশন করা গেলে অনেকটা ক্ষতির থেকে বাঁচবেন চাষিরা।
"