জামালপুর প্রতিনিধি

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ

বিদ্যালয় মাঠে সবজি চাষ শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার হাতিভাঙ্গা ইউনিয়নের সাকোয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল করে সবজি চাষ করছেন একদল প্রভাবশালী অভিযোগ ওঠেছে। এতে ওই বিদ্যালয়ের চার শতাধিক শিক্ষার্থীর খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। এলাকার প্রভাবশালী তাদের নিজের জমি দাবি করে মাঠ দখলে রেখে ওই জায়গাতে সবজির চাষ করছেন অভিযোগ ওঠেছে।

জানা গেছে, জামালপুরের উত্তর জনপদে যমুনা-ব্রহ্মপুত্র বেষ্টিত পশ্চাৎপদ উপজেলা দেওয়ানগঞ্জ। অন্যান্য উপজেলার চেয়ে শিক্ষার হার তুলনামূলকভাবে এখানে কম। এ অবস্থায় সাকোয়াপাড়া উচ্চবিদ্যালয়টি নানাভাবে সুবিধাবঞ্চিত। বিদ্যালয়টি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ২০১০ সালে এর এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ে মোট ১২ জন শিক্ষক রয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে মোট ছয়জন। এখানে প্রতিদিন চার শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীর পদভারে মুখর হয়ে থাকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের ফলাফলও সন্তোষজনক এ প্রতিষঠানের।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির নিরন্তর প্রচেষ্টায় পড়ালেখার মান ভালো হলেও বিদ্যালয়টির ভবনের জীর্ণদশায় ক্ষোবের সৃষ্টি হয়েছে সবার। এর মধ্যে চলতি বছর এলাকার প্রভাবশালী মহল নিজেদের জমি দাবি করে বিদ্যালয়ের পুরো মাঠ দখল করে সবজি আবাদ করেছে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষা, ক্রীড়া ও সুস্থধারার সংস্কৃতি চর্চার পরিপন্থি। যারা এ উদ্ভট কাজটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।

শিক্ষাথীদের দাবি, ছাত্র-ছাত্রীদের মনো-সামাজিক উন্নয়নে খেলাধুলা হলো অন্যতম একটা অনুসঙ্গ। অথচ খেলার মাঠটিই দখল করে সবজি চাষ করা হয়েছে। তারা অবিলম্বে বিদ্যালয়ের মাঠ অবমুক্ত করে খেলার উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে উদাত্ত আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে বিদ্যালয়টি সংস্কার এবং বহুতল ভবন নির্মাণ করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা পয়ঃনিষ্কাষণ ও নামাজের স্থান করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছে শিক্ষার্থীরা।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও জমিদাতাদের দ্বন্দ্বে কিছুই বলতে নারাজ তিনি।

এদিকে দাতা সদস্য মো. গুতু মিয়া বলেন, এ জমি আমার। বিদ্যালয় সংলগ্ন আমার ২৫ শতাংশ জমি ওই বিদ্যালয়ের নামে দেওয়ার কথা হয়েছিল। কিন্তু নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির সঙ্গে গড়মিল হওয়ায় এখন আর তা দেওয়া সম্ভব না বিধায় জমিটি চাষের আওতায় নিয়ে এসেছি। সাবেক সভাপতি মো. গোলাম মিয়া বলেন, দলীয়চাপে গুতু মিয়ার প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে না পারায় এখন আর বিদ্যালয় সংলগ্ন ওই জমি তিনি আর দিচ্ছিনা। এ বিষয়ে দপ্তরে পত্র প্রেরন করা হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এডহক কমিটির সভাপতি ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের দপ্তরি নিয়োগ নিয়ে সাবেক পরিচালনা কমটির সভাপতি ও দাতা সদস্যের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে খেলার মাঠ সংক্রান্ত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে তিনি উপজেলা মাধ্যমিকের একাডেমিক সুপার ভাইজারের সঙ্গে আলোচনা করে এর সমাধান চেষ্টা করবেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close